4thPillar



পহেলগাম থেকে মুর্শিদাবাদ – এক বিদ্বেষের রাজনীতি

পহেলগাম থেকে মুর্শিদাবাদ – এক বিদ্বেষের রাজনীতি

‘সংস্কারী সনাতনীদের মহিলাদের ওপর অত্যাচার করাটা প্রশংসনীয় কীর্তি’ 1946 সালে আমার মা ছিলেন কলেজে ফার্স্ট ইয়ারের ছাত্রী। কলেজ ছাড়া বাইরের জগতের সঙ্গে সম্পর্ক অল্পই। তাও যাতায়াত পর্দা ঢাকা ঘোড়ার গাড়িতে। আগের বছর মেজমামা বিয়ে করেছেন এক বাঙালি ক্রিশ্চিয়ান মহিলাকে। চিঠি মারফত শুধু ওই খবরটুকুই দিয়েছেন বাবা মাকে এবং এ তরফ থেকে "বউ নিয়ে তুমি বাড়ি এসো" জাতীয় কোন চিঠি যায়নি। কাজেই 1946 এর আগস্ট মাসে নৌসেনা মেজো মামার যখন হঠাৎ যুদ্ধে ডাক পড়ল, তখন 15 দিনের মেয়েকে নিয়ে মেজ মামিমার বাপের বাড়ি যাওয়া স্থির করাটাই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু হাওড়া স্টেশন থেকে তখন কিছুতেই খিদিরপুর যাওয়া সম্ভব হল না। সমস্ত ট্যাক্সি বলল লক্ষ টাকা দিলেও ওদিকে যাবে না এবং দাঙ্গাকারীরা শুধু ওদের নয়, দুধের শিশু, তার মা কাউকেই ছাড়বে না। মেজমামা তখন "আমার মা কিছুতেই ফেরাবেন না" দৃঢ় বিশ্বাসে শ্যামপুকুরে দাদুর বাড়িতে এসে মেয়ে বউকে রেখে গেলেন। নতুন বউ, নতুন নাতনি সবকিছুর আনন্দ খুবই ক্ষণস্থায়ী হল, কারণ পরদিনই সকালে বাড়ির সামনে দেখা গেল পাড়ার ছেলেরা, যাদেরকে বড়জোর মস্তান বলা যায়, এতদিন পর্যন্ত গুন্ডা বলা যেত না, তারা একটা মুসলমান মজুরকে পিটিয়ে মারছে। বেচারি লুকিয়ে ছিল তিন দিন, পেটের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে খাবার খুঁজতে বেরিয়েছিল। এই বীভৎসতা সহ্য করতে না পেরে দাদু বললেন অন্তত আমার বাড়ির সামনে থেকে সরে যা তোরা। এ গল্প আমি ছোটবেলা থেকে মায়ের মুখে বেশ কয়েকবার শুনেছি। প্রায় একই ধরণের বর্ণনা পরে পড়লাম তপন রায়চৌধুরীর বাঙালনামাতে। কিছু কট্টরপন্থীকে ওনার সম্বন্ধে নানা বিশ্রী অপবাদ দিতে শুনেছি এবং বলতে শুনেছি উত্তর কলকাতার এইসব দাঙ্গার গল্প নাকি মিথ্যে! আমার আধা পর্দানশীন মা এবং তপন রায় চৌধুরী দুজনের মধ্যে একটাই মিল, বয়স। কাজেই সে যাই বলুক, উত্তর কলকাতার সেই দাঙ্গা, যেখানে সাধারণ পাড়ার ছেলেরা উত্তেজিত হয়ে একটা গরীব মজুরকে মেরে ফেলে, আমি অন্তত তাকে মিথ্যে কিছুতেই ভাবতে পারিনা। কাজেই সামান্যতম সাম্প্রদায়িক মন্তব্যও আমার কাছে ভীষণ অস্বস্তিকর। পুণেতে আমার বাসস্থানের দেয়ালের ওপারটাতে যে কমপ্লেক্স, সেখানে অর্থনৈতিকভাবে রুগ্ন জনসাধারণকে থাকার জন্য পুণে মিউনিসিপ্যালিটির নিয়ম অনুযায়ী বাসস্থান বানিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে সেই কমপ্লেক্সের অন্য দেয়ালের ওপারে অবস্থিত অতি অভিজাত হাউসিংটি। এই কমপ্লেক্স থেকে যারা হেঁটে বা অটোতে চড়ে বেরোয়, তাদের মধ্যে প্রথমেই নজরে পড়ে বেশ কয়েকজন বোরখাধারী মহিলা। সঙ্গে কয়েকজন শিশু। মেয়ে শিশু হলে কোলেরই হোক বা হেঁটেই চলুক, পরনে হিজাব। এটা আমার ভীষণ অস্বস্তির কারণ, কারণ আমি আমার কম বয়সে এরকম দৃশ্য কখনও দেখিনি। যত ঘনঘন এই মুখহীন প্রাণীদের বেরোতে দেখি, দেখলে যে কোনও লোকের প্রথম ধারণা হবে, ওখানে হয়তো একটা ধর্মাবলম্বী লোকজনই থাকে এবং তাদের সংখ্যা অনেক। কিন্তু পাঁচিলের এপার থেকে বুঝতে পারা যায়, ওদিকে ধুমধাম করে গণপতি উৎসব, দেওয়ালি ইফতার সবই চলছে। জনসংখ্যার ব্যাপারটাও পরিমিত, সেটাও দেখতে পাওয়া যায়। অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল বলতে কাদের বোঝায় ঠিক জানিনা, কিন্তু এখানকার বাসিন্দাদের বেশিরভাগেরই বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করার জন্য ভ্যান আছে। কিছু না হোক হাত গাড়ি, তাতে বিক্রির মাল বেশ দামি ফল বা সবজি। মুর্শিদাবাদ থেকে আসা দু একজন মুরগির দোকানের কর্মচারীরাও এখানে থাকে, তারা অবশ্যই দরিদ্র। মনে হয় কারও বাড়ি ভাড়ায় থাকে। এই কমপ্লেক্স এ যাদের সঙ্গে আমার মোলাকাত হয়, ঘটনা চক্রে সবাই মুসলিম। কেউ ফল বিক্রেতা বা বিক্রেত্রী, কেউ দর্জি, কেউ ঘড়ি সারায়। খদ্দের হিসেবে সবাই মোটামুটি খাতির করে। বাঙালি ছেলেগুলোর অবশ্য সব সময়েই গজগজ, যেমন বাঙালিরা করে থাকে। বাকিরা পাক্কা ব্যবসায়ী।

আপনি নিজে কজন মুসলমানকে চেনেন?
আপনি নিজে কজন মুসলমানকে চেনেন?

(1) বুকে হাত দিয়ে বলুন। আমি চিনি। খুব কাছ থেকে চিনি। অনেক বছর ধরে চিনি। তারা উদারহৃদয়। তারা …

নিজবাসভূমে পরভাষী
নিজবাসভূমে পরভাষী

বেঙ্গালুরুর এক ভদ্রলোক জনপ্রিয় সমাজমাধ্যম X হ্যান্ডেলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এই বলে, যে আরবান কোম্পানি নামে যে…


Trending


ভিডিও

উদভ্রান্ত পশ্চিমবঙ্গের সরকার, ক্ষিপ্ত বাংলার মানুষ


হুতোম
মৌতাত
মৌতাত
শব্দব্রহ্ম
শব্দব্রহ্ম
নগরকেত্তন
নগরকেত্তন
১২-ইয়ারি
১২-ইয়ারি

মুক্তচিন্তা
অন্য ভাবনা
অন্য ভাবনা
বইপত্র
বইপত্র
আমার পাঠ
আমার পাঠ
দর্পণ
দর্পণ

চর্চা
দেশের কথা
দেশের কথা
মেয়েদের কথা
মেয়েদের কথা
সংলাপ
সংলাপ
পরিবেশ
পরিবেশ

মানবজমিন
অ-সাধারণ
অ-সাধারণ
পোর্ট্রেট
পোর্ট্রেট
সফলনামা
সফলনামা
আপনার কথা
আপনার কথা

ফিল্ম
শর্ট-ফিল্ম
শর্ট-ফিল্ম
ডকুমেন্টারি
ডকুমেন্টারি

সংস্কৃতি
মণিমুক্তো
মণিমুক্তো
মিউজিক
মিউজিক
থিয়েটার
থিয়েটার
গ্যালারি
গ্যালারি

ফোরাম
গ্রাফিতি
গ্রাফিতি
শেয়ারিং
শেয়ারিং
আর্টিকল 19
আর্টিকল 19

ভিডিও
vdo
vdo

ব্লগ
সুদীপ্ত সেনগুপ্ত
সুদীপ্ত সেনগুপ্ত
শিখা মুখার্জী
শিখা মুখার্জী
রজত রায়
রজত রায়

Testimonials

আমরা এখানে আপনাদের কথা বলার জন্য প্রচেষ্টা করি। তার মধ্যে কিছু আপনাদের ভালো লাগে, কিছু হয়তো নাও লাগতে পারে। আমরা দুটোকেই সমানভাবে সন্মান করি। তাই আপনাদেরই কিছু মন্তব্য আমাদের উদ্দেশ্য , আমরা এখানে প্রত্যয়িত করলাম।.


4thPillar

Support 4thPillarWeThePeople

Admin Login Donate
আমাদের কথা

আমরা প্রশ্ন করি সকলকে। আমরা বহুত্ববাদী, স্বাধীন, যুক্তিবাদী। আমরা সংশয়বাদী; তর্কশীল; আবার সহিষ্ণুও বটে। আসুন কথা হোক; পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান, বিশ্বাস রেখে আলোচনা হোক। মননের ইতিহাসে শেষ কথা বলার স্পর্ধা কারও যেন না হয়; আবার কোনও স্বরই যেন অকিঞ্চিৎকর বলে উপেক্ষিতও না হয়। এই রকম ভাবনার একটা ইন্টারনেট-ভিত্তিক বিশ্বব্যাপী কমিউনিটি গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।

© 2023 4thPillarWeThepeople. All rights reserved & Developed By - 4thPillar LeadsToCompany
// Event for pushed the video