অবশেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও স্বীকার করলেন যে গোটা দেশকে ২১ দিন ঘরবন্দি করে রাখা ছাড়া করোনা সংক্রমণের প্রসার ঠেকানোর অন্য উপায় রাষ্ট্রের হাতে নেই।
দেশবাসীর উদ্দেশে মঙ্গলবার রাতে ২২ মিনিটের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বার বার জনতা কারফিউর কথা বলে মনে করিয়ে দিলেন, গোটা দেশ এখন এই সঙ্কটের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। তিন সপ্তাহ ঘরবন্দি থাকাটা যে জরুরি, সে কথা ব্যাখ্যা করে মোদির দাবি, সরকার সব অত্যাবশকীয় সামগ্রীর জোগান অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু বাস্তব অবস্থাটা কিন্তু মোদির দাবির সঙ্গে মিলছে না।
শপিং মল আগেই বন্ধ হয়েছে, এখন বাজারহাটও বন্ধ রয়েছে। দু’ একটা দোকান অল্প সময়ের জন্য খুললেও তাতে জিনিসপত্র প্রায় কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার অত্যাবশকীয় পণ্যের জোগান চালু রাখবে বলে দাবি করার পরেও কলকাতার বহু জায়গাতেই দু্ধ, মাখন ও পাঁউরুটি অমিল। বিগ বাস্কেট, স্পেনসার্স প্রভৃতি যারা অনলাইন অর্ডার নিয়ে হোম ডেলিভারি দিয়ে থাকে, তারাও অর্ডার নিতে অস্বীকার করছে। বিগ বাস্কেট তো খোলাখুলি জানিয়ে দিয়েছে, তারা এখন কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে কারণ, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে অনুমোদন দেওয়া হলেও স্থানীয় প্রশাসন তাদের পণ্য চলাচলে নিষেধ জারি করে করেছে।
এই অবস্থায় যেটা দেখার তা হল, সরকার কত দ্রুত ঘরবন্দি দেশকে বাড়ির দরজায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জাতির উদ্দেশে করোনা ভাষণে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা ছিল। প্রথমত, ২১ দিনের জন্য গোটা দেশে লক ডাউন। দেশের সমস্ত মানুষের কাছে মোদির আবেদন, এই ২১ দিন বাড়িতে স্বেচ্ছাবন্দি থাকার সময় তাঁরা যেন যাঁরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা ঠেকাতে লড়াই করছেন সেই সব চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থকর্মী, পুলিশ এবং অন্যান্য অত্যাবশকীয় সেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের জন্য প্রার্থনা করেন। প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ, এই সময় কোনও গুজবে কান দেবেন না, গুজব ছড়াতে দেবেন না, অন্ধবিশ্বাস থেকে দূরে থাকুন। ডাক্তারের নির্দেশ ছাড়া কেউ যেন কোনও ওষুধ না খান, এটাও দেশবাসীর কাছে মোদির আবেদন।
কিন্তু যাঁরা গোমূত্র খাইয়ে করোনা আপদকে দূর করে দিতে তৎপর, তাঁদের কী হবে? মোদি তো এখনও তাঁদের সম্পর্কে নীরব।