4thPillar


রসায়নে এবারের নোবেলজয়ীরা কি সত্যিই জিন-কাটা কাঁচির জনক?

সুস্মিতা ঘোষ | 09-10-2020May 23, 2023
রসায়নে এবারের নোবেলজয়ীরা কি সত্যিই জিন-কাটা কাঁচির জনক?

এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার ঘোষণার পর বিজ্ঞানী মহলে একটা গুঞ্জন উঠেছে- যাঁরা পুরস্কার জয়ী, তাঁদের ছাড়াও আরও শত সহস্র বিজ্ঞানীর অবদান রয়েছে এই আবিষ্কারটিকে বর্তমান অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করতে। তাই শুধু পুরস্কার জয়ী নয়, স্বীকৃতি দেওয়া হোক বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারকে। সেই আবিষ্কারগুলি কীভাবে বিজ্ঞানের যাত্রাকে সমৃদ্ধ করেছে জয়গান হোক তার।

 

লক্ষণীয় যে এই বছর নোবেল পুরস্কার ঘোষণার পর বিজয়িনীদের কাজের অতিরিক্ত সরলীকৃত ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলা হয়েছে যে এঁরাই নাকি জিন কাটার কাঁচির আবিষ্কর্তা, এঁরাই নাকি CRISPR-cas-এরও আবিষ্কর্তা। বিজ্ঞানীদের আপত্তি সেইখানে। এঁদের যে আবিষ্কার, যাকে gamechanger বলা হচ্ছে, তা হঠাৎ একদিনে আবিষ্কার হয়নি, বহুযুগের বহু বিজ্ঞানীর বহু সাধনার ফসল তিল তিল করে প্রেরণা জুগিয়েছে এঁদের, এবং এঁদের কাজ ও প্রেরণা জোগাচ্ছে আরও অনেক অনেককে। এই প্রবন্ধে তারই একটা ছোট্ট ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করছি। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং যথেষ্ট সুপরিচিত শব্দ। এই করোনাকালে নভেল করোনার উৎপত্তি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং দিয়ে কিনা, সেই জল্পনার নিষ্পত্তি আজও হয়নি। GMO বা BT তুলো, BT বেগুন নিয়েও মতবিরোধ চলতেই থাকছে। বাইরের থেকে পোকামারা জিন যে এই BT শস্য গুলিতে ঢোকানো হয়েছে, এটাও অনেকেরই জানা। Double Helix-এর চেহারা সবার সুপরিচিত- এবং DNA যে সুতোর মতো সেটাও অনেকেরই জানা। কাজেই সেই সুতো কাটা যায়, তাকে আবার গেরো দিয়ে জোড়া যায় বা মধ্যে আর একটু অন্য রঙের সুতোও জুড়ে দেওয়া যে যায়, এটা কল্পনা করে নেওয়াটা কারও পক্ষেই কঠিন নয়। কাজেই এটা মনে রাখা উচিত ছিল, যে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং যখন বহু যুগের পুরনো, প্রথম জিন-কাটা কাঁচিও নিশ্চয়ই অনেক যুগ আগে আবিষ্কৃত হয়েছিল।

 

জিন -কাটা কাঁচির ইতিহাস

ষাটের দশকের শেষদিকে তিন বিজ্ঞানী Werner Arber, Hamilton O. Smith, and Daniel Nathans দেখলেন যে ব্যাকটেরিয়াকে যখন কোনও ভাইরাস আক্রমণ করে, তখন ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার গায়ে বসে বসে নিজের DNA ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে ইঞ্জেক্ট করে দেয়। সেই DNA ব্যাকটেরিয়ার কোষের সব কিছু দখল করে বংশবৃদ্ধি করার চেষ্টা করে, যদি না ব্যাকটেরিয়া নিজেই সেই ভাইরাল DNA-এর দফারফা করতে পারে। প্রকৃতি ব্যাকটেরিয়ার হাতেও কৃপাণ তুলে দিয়েছে- অনেক ব্যাকটেরিয়াই ভাইরাল DNA ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে তাকে টুকরো টুকরো করে ফেলে। এঁরা আরও দেখলেন যে, সব ব্যাকটেরিয়া সব ভাইরাল DNA-কে কাটতে পারে না। কিন্তু যখন কাটে, সেটা একেবারেই এলোমেলো কাটা নয়। ভাইরাল DNA-র মধ্যে কিছু কিছু বিশিষ্ট sequence বা অনুক্রম থাকলে তবেই সে কাটা পড়ে। এক এক জাতের ব্যাকটেরিয়া এক এক রকম অনুক্রমকে চিহ্নিত করে সেখানে সেই DNA-কে কাটে, এবং এই অনুক্রম চিনে DNA কাটা সম্ভব হয় এক জাতের নতুন ধরনের এনজাইম বা উৎসেচক দিয়ে। যেহেতু এই এনজাইমগুলি ভাইরাসকে বাধা দেয়, অর্থাৎ restrict করে, তাই এই এনজাইম গোষ্ঠীর নাম দেওয়া হল restriction endonuclease। Endonuclease-এর মানে হল যে, এনজাইম DNA বা RNA-কে মাঝখান থেকে কাটে, ধার ধরে নয়। এই এনজাইমকে ব্যাকটেরিয়া থেকে বের করে শোধন করে নিলে সে টেস্ট টিউবের মধ্যেও  DNA-কে কাটে এবং কাটা টুকরো গুলিকে আলাদা করা যায়, এমনকী জুড়েও ফেলা যায়। এই হল প্রথম জিন-কাটা কাঁচি। এঁরা তিনজনেই নোবেল প্রাইজ পান 1978 সালে। Paul Berg 1970 সালে বাঁদরে টিউমার ঘটায় এমন ভাইরাস SV40-এর DNA এবং ব্যাকটেরিয়ার DNA এই রকম কাঁচি দিয়ে কেটে জোড়া লাগিয়ে খিচুড়ি বা হাঁসজারু বানালেন। নোবেলজয়ী Paul Berg-কে  বলা হয় recombinant DNA বা জিন কাটা-জোড়ার জনক। এরপর থেকে এইভাবে খিচুড়ি বানানো খুব সহজ হয়ে গেল। দেখা গেল যে ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে যে সব ভাইরাস গজায় (bacteriophage), তাদের DNA কেটে তার মধ্যে যে কোনও জিন পুরে দিলে সেই জিন, বা সেই জিন থেকে উদ্ভূত প্রোটিনকে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি কপিতে বানানো যায়। গবেষণার জন্যেই হোক, বা ব্যবসায়িক কারণে উৎপাদনই হোক, বেশি পরিমাণ DNA বা প্রোটিন সব সময়েই লাভজনক। কাজেই জৈবপ্রযুক্তির সূচনা এই সময়েই। কৃত্রিম ইনসুলিন ও নানা হরমোন, নানা ধরনের এনজাইম, এমনকী উপরোক্ত restriction endonuclease, ব্যবসায়িক মাত্রায় ও মানে তৈরি হওয়া শুরু হল। আর জিন রহস্য আরও বেশি করে উদ্ঘাটিত হওয়া শুরু হল। বিজ্ঞানীরা ভাবতে শুরু করলেন রোগ সারানোর ক্ষেত্রে বা কৃষির ক্ষেত্রে নিজের ইচ্ছে মতো জিন যদি পাল্টে বিপ্লব আনা যায়। BT শস্য এইভাবেই এল।

 

জিন কাটা জোড়ার নানা পদ্ধতি গবেষণাতে আরও বেশি করে কাজে লাগে। যে কোনও জিন বা যে কোনও প্রোটিনের কর্মপদ্ধতি বুঝতে গেলে সেই জিনের কর্মক্ষমতাতে পরিবর্তন আনতে হয়। বাড়িয়ে, কমিয়ে বা বন্ধ করে দেখতে হয় এবং সেই কাজে জিন কাটা জোড়া খুব কাজে দেয়। কিন্তু প্রতিটি জিনের ব্যবহার আলাদা, প্রতিটি প্রোটিনের স্বভাব আলাদা এবং মানুষ, ইঁদুর, মাছি, পাখি, গাছ, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস- এদের প্রত্যেকের জন্য আলাদা রকম ব্যবস্থা করতে হয়। একই প্রজাতির মধ্যে বিভিন্ন জাতি, এমনকী আলাদা ব্যক্তির জন্যও কখনও কখনও আলাদা পদ্ধতির ব্যবস্থা করতে হয়। কাজেই জিন কাটার নতুন নতুন কাঁচির সন্ধান চলতেই থাকল।

 

RNA-এর নতুন ভূমিকা - অন্য রকম জিন-কাটা কাঁচি এবং Jennifer Doudna

সত্তরের দশক পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল যে এনজাইম, অর্থাৎ শারীরবৃত্তিয় প্রক্রিয়া গুলির অনুঘটকরা জাতে প্রোটিন। সত্তরের শেষদিক থেকে সেই ধারণা পুরো পাল্টে দিলেন Sidney Altman ও Tom Chech। ওঁরা দেখালেন যে ফিতের মত RNA-ও নানা ভাবে ভাঁজ হয়ে এনজাইমের কাজ করতে পারে, এমনকী যে সব জিন RNA-ভিত্তিক তাদের কাটতেও পারে। এঁরাও নোবেল পেয়েছিলেন 1989 সালে "RNA-কাঁচি' hammerhead ribozyme আবিষ্কারের জন্য। দেখা গেল যে hammerhead ribozyme-ও শুধু কাটে তাই নয়, নির্দিষ্ট অনুক্রম খুঁজেই কাটে।

 

আশির দশক থেকেই দেখা গেল কোষের মধ্যে আরও নানা ধরনের RNA প্রকৃতিই বানিয়ে রেখেছে, যারা জিনকে নানাভাবে জড়িয়ে ধরে শারীরবৃত্তীয় কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে। এক ধরনের RNA-কে পাওয়া গেল, যারা গাইড করে জিনের ঠিক কোন অংশটা কাটতে হবে। এদের নাম দেওয়া হল guide RNA। প্রথম যুগের সন্ধান পাওয়া guide RNA-রা DNA-এর সঙ্গে কাজ করত না, জিন থেকে প্রোটিন বানানোর মধ্যপথে যে সংকেত বাহক RNA অর্থাৎ messenger RNA উৎপত্তি হয়, এই guide RNA-রা তাদের সঙ্গে বেঁধে এমনভাবে কেটে দিতে সাহায্য করত, যে প্রাণী বা উদ্ভিদ শরীরের মধ্যে কোনও কোনও জিন প্রয়োজন অনুযায়ী সুইচ অফ - অন করা যায়। ধীরে ধীরে প্রয়োজন অনুযায়ী জিন সুইচ অফ - অন করার জন্য আরও নানা ধরনের সন্ধান পাওয়া গেল - miRNA, siRNA ইত্যাদি, এবং এদের কৃত্রিম ভার্সন দিয়ে গবেষণার কাজে কৃত্রিম ভাবে সুইচ অফ - অনও করার কিছু প্রণালী বের হল, যাদের নাম দেওয়া হল RNA interference বা RNAi। ভাবা শুরু হল এদেরকে চিকিৎসার কাজেও লাগাতে পারা যায় কিনা।  RNA সম্বন্ধে এত কথা বলার আরও একটা কারণ হল এবারের রসায়নের নোবেলজয়িনী Jennifer Doudna এই সমস্ত ধরনের RNA নিয়ে কাজ করেছেন গত প্রায় ত্রিশ বছর। না, ঠিক আবিষ্কর্তা বলা চলে না কোনওটার জন্যই। 

 

CRISPR-Cas

জিন কাটার জন্য ব্যবহৃত যে যে এনজাইমের কথা উপরে বলা হয়েছে, অর্থাৎ restriction endonuclease নিয়ে কাজ করার সবচেয়ে বড় অসুবিধে হল যে এই ধরনের enzyme-গুলি কাটে একমাত্র কয়েকটি বাঁধা ধরা অনুক্রমে- যেগুলো প্রাকৃতিকভাবে সব জিনে নাও থাকতে পারে।

 

2002 সাল থেকে ভাইরাসের হাত থেকে ব্যাকটেরিয়ার আত্মরক্ষার নতুন আরও একটি রহস্য ধীরে ধীরে উন্মোচিত হল। কোনও ভাইরাস ব্যাকটেরিয়াকে আক্রমণ করার পরও যদি ব্যাকটেরিয়াটি বেঁচে যায়, তা হলে তার মধ্যে ওই ভাইরাসটির জন্য প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে যায়। ভাইরাসটির রয়ে যাওয়া টুকরো টুকরো DNA-এর আশেপাশে ব্যাকটেরিয়া কিছু অনুক্রম বারবার সংযোগ করে এক অদ্ভুত DNA তৈরি করে। Ruud Jansen জৈবতথ্য বিশ্লেষণ করে এদের আবিষ্কার করে নাম দিয়েছিলেন clustered regularly interspaced short palindromic repeats (CRISPR)। 2005 সালে K E Nelson খুঁজে পেলেন এমন এক প্রোটিন গোষ্ঠী, যারা ওই CRISPR গোত্রের অনুক্রম খোঁজে। এদের নাম দিলেন CRISPR associated বা Cas প্রোটিন। Fransisco Mojica নামে এক বিজ্ঞানীও ওই একই সময়ে ল্যাবে পরীক্ষা করেই দেখিয়ে ছিলেন CRISPR গোত্রের অনুক্রমই আক্রমণকারী ভাইরাসকে প্রতিহত করে। বেচারা Mojica! দু'বছর ধরে ওনার আবিষ্কার কেউ বিশ্বাসই করেনি, তাই তাঁর পেপার প্রকাশিতই হয় নি।  2005-এ হল প্রকাশিত, কিন্তু তেমন নামী পত্রিকাতে নয়। 2006 থেকেই কিন্তু অনেক বিজ্ঞানী হঠাৎ CRISPR-Cas নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। কেউ দেখালেন CRISPR অনুক্রম চিনে Cas enzyme ভাইরাসের DNA কেটে দেয়। কেউ বললেন আসলে পদ্ধতিটা RNAi, যেটার কথা উপরে বলা হয়েছে। CRISPR-cas জুটি নিয়ে আরও বহু বিজ্ঞানী কাজ করেছেন এবং করে চলেছেন - বেশিরভাগের ভাগ্যেই তেমন কোনও খ্যাতি জোটেনি। এঁদের অনেকেই চেষ্টা করছিলেন CRISPR-Cas জুটিকে কীভাবে মর্জি মত জিন কাটার কাজে ব্যবহার করা যায়।

 

নতুন জিন কাটার কাঁচি?

Restriction endonuclease (RE)-এর কথা মনে পড়ছে, তাই তো? কিন্তু এখানে তফাৎ হল CRISPR অনুক্রম অজস্র রকমের হতে পারে, ইচ্ছে মতো অনুক্রম ডিজাইন করা যেতে পারে যে কোনও। কোনও সীমা নেই, কিন্তু Cas প্রোটিন RE-এর মত অত বেশি ধরনের হওয়ার দরকার নেই।

Jennifer Doudna এবং  Emmanuelle Charpentier-এর অবদান

ঘটনাক্রমে Jennifer Doudna এবং Emmanuel Charpentier, দু'জনেই আলাদা আলাদা ভাবে CRISPR-Cas জুটি নিয়ে কাজ শুরু করলেন 2010-11 সালে। সেই সময়েই  দু'জনের  দেখা হল এক কনফারেন্সে। 2012 সালে দু'জনের মিলিত প্রচেষ্টায় এবং আরও কয়েকজন ছাত্র / বিজ্ঞানীর সহায়তায় এঁরা Science পত্রিকায় দেখালেন যে টেস্ট টিউবে, সম্পূর্ণ কৃত্রিমভাবে ডিজাইন করা CRISPR গোত্রের RNA guide-RNA হিসেবে কাজ করে এবং সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারিং করে বানানো Cas enzyme-কে যে কোনও DNA-এর যে কোনও অনুক্রমকে একেবারে নির্দিষ্ট জায়গায় কাটতে সক্ষম করে। এঁদের প্রদর্শিত guide-RNA-এর ডিজাইনটি খুব সরল - যে কোনও বিজ্ঞানীই নিজের ইচ্ছে মত এই স্টাইলের guide-RNA বানাতে পারবে বেশ সহজে এবং নানা রকমের Cas এনজাইম এখন কিনতে পাওয়া যায়। যেহেতু যে কোনও DNA-কেই মর্জি মত যে কোনও জায়গায় কাটা এখন সম্ভব, যে কোনওভাবে DNA কেটে জুড়ে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং করার সীমা এখন প্রায় আকাশেই ছুঁয়ে গেল। 

 

বিজ্ঞানীদের মৃদু অসন্তোষ কেন?

CRISPR-Cas জুটির মাধ্যমে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং করার সীমারেখা বাড়ানোর চেষ্টা আরও বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানীই তো করছিলেন। তাঁদের লেখা রিসার্চ পেপারগুলি ধাপে ধাপে সাহায্য করেছে Doudna ও Charpentier-কে। এটাই বিজ্ঞানের নিয়ম। তাছাড়া, এই প্রযুক্তি gamechanger হতে পারে, কিন্তু এর উদ্ভাবনার মধ্যে সাংঘাতিক নতুনত্ব নেই। যে কোনও সাধারণ জিনতত্ত্ববিদ যেরকম প্রণালীবদ্ধ পদ্ধতি অনুসরণ করে সেইরকম ভাবেই এঁরা এগিয়েছিলেন, অন্যরাও। তাছাড়া অনুক্রম ধরে শুধু কাটলেই তো হল না, জুড়তেও হবে। কীভাবে জুড়তে হবে, এই কাটা জোড়ার পদ্ধতিতে অরিজিনাল থেকে ভাল কী করে হবে অর্থাৎ ‘এডিটিং’ কী কী ভাবে করা যাবে, সেখানে অন্য অন্য বিজ্ঞানীদের অনেক অবদান। খালি ইঁদুরদৌড়ে এদের কাজ ঠিক মুহূর্তে প্রকাশিত হতে পেরেছিল, তাই এদের ভাগ্যেই নোবেলের শিকে ছিঁড়ল।

 

জিনোম  এডিটিং এর বর্তমান ভবিষ্যৎ

নোবেল যেই পাক না কেন, CRISPR-Cas এর সাহায্যে গত দশ বছরে অনেক দুরারোগ্য ব্যাধিকেই সারানোর চেষ্টা চলছে। এলার্জি জনক এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক বস্তুবিহীন খাদ্যশস্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। রোগনির্ণয়ে ব্যবহার হচ্ছে এবং সাম্প্রতিকতম করোনা নির্ণয়ের FELUDA টেস্টও এই পদ্ধতিতে বানানো। এত গুণ বা ক্ষমতা যার, বিতর্ক অবশ্যই তার পিছু ছাড়ে না। চিন দেশে এক বিজ্ঞানী ভ্রূণকোষে অদলবদল করে এমন দুই যমজ কন্যার জন্ম দিয়েছেন, যাদের কোনওদিন এইডস রোগ হবে না। কিন্তু যেহেতু মানুষ নিয়ে এত বড় পরীক্ষা করার আগে বিজ্ঞানী কারও কোনও অনুমতিই নেননি, বিজ্ঞানীর ঠাঁই হয়েছে শ্রীঘরে। নোবেলজয়ী বিজ্ঞানীদ্বয় নিজেরাও তাই এই পদ্ধতি ব্যবহারের সময় মানবিক অধিকার ও ন্যায়নীতির খেয়াল রাখার উপর জোর দিয়েছেন যাতে আগামী দিনে আমরা যেন শুধু এর সুফলই ভোগ করতে পারি।

ড: সুস্মিতা ঘোষ ডায়াগনোরাইট-এর প্রতিষ্ঠাত্রী এবং জৈব-রসায়নবিদবিটস পিলানির পরামর্শদাত্রী। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের পোস্ট ডক্টরাল ফেলো সুস্মিতার ডায়াগনোরাইট একটি সম্পূর্ণ মহিলা পরিচালিত স্টার্ট-আপ সংস্থা, যার লক্ষ্য সকলের জন্য সুলভে বিজ্ঞানসম্মত আধুনিক ডায়গনস্টিক্স



New
বিদায় পিটি নায়ার: কলকাতার ইতিহাসবেত্তা
এগজিট পোল মিলে গেলেও যে প্রশ্ন উঠবেই
কংগ্রেস সেঞ্চুরি না করলে কে রুখবে বিজেপিকে?


Other Writings by -সুস্মিতা ঘোষ | 09-10-2020

// Event for pushed the video