হম কিসিসে কম নেহি ভ্যাকসিন!
ধর তক্তা মার পেরেক প্রবচনটির সাথে পরিচয় আছে নিশ্চয়। আমেরিকার মত আমাদের ও দু' দু' খানা ভ্যাকসিন আছে কি দেখাতেই হবে আত্মনির্ভরতার স্লোগানের সঙ্গে সঙ্গে! ভ্যাকসিন কাজ করার যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ হাতে না থাকা সত্ত্বেও তাকে ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়াকে তাছাড়া আর কি বলে!
এমনটাই হয়েছে বছরের প্রথম রবিবার ছাড়পত্র পাওয়া দুটি ভ্যাকসিনের একটিতে- ভারত বায়োটেকের সম্পূর্ণ দেশি ভ্যাকসিন Covaxin এর ক্ষেত্রে। গত ছ সাত মাসে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শব্দটার সঙ্গে পরিচয় হয়ে গেছে অনেকেরই, এবং তার ফেজ 1, 2, 3 ইত্যাদিও অল্পবিস্তর জানা হয়ে গেছে। তাও একবার মনে করিয়ে দিই- যে কোনও নতুন ওষুধ কিংবা ভ্যাকসিন যেহেতু শরীরের মধ্যে ঢুকে কাজ করে, সেই জন্যে তাকে নানা রকম পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, যাতে ক্ষতিকারক কোনও জিনিস তৈরি না হয়। কোভিড ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে প্রথমে ল্যাবরেটরিতে পালিত নানা পশুর শরীরে এই ভ্যাকসিনের নানা ডোজ ইনজেকশন দেওয়া হয়। "গিনিপিগ" শব্দটা আমাদের পরিচিত। আজকাল অবশ্য গিনিপিগ সেভাবে ব্যবহার হয় না। ছোট ইঁদুর তার জায়গা নিয়েছে। এরপরে ইঁদুরকে ল্যাবরেটরিতে কৃত্রিম ভাবে গজানো ভাইরাসের মধ্যে ছেড়ে দিয়ে দেখা হয় সে সুস্থ রইল কিনা। ইঁদুর যদি এই ভ্যাকসিন আশাপ্রদ প্রতিরোধ ক্ষমতা দেখায়, তবে বিবর্তনের ধাপে মানুষের কাছাকাছি কোনও প্রাণীতে আবার দেখে নেওয়া হয় কাজ করছে কিনা, ক্ষতি দেখা যাচ্ছে কিনা। কখনও কখনও এই সব প্রাণীর রক্ত থেকে এন্টিবডি বার করে দেখা হয় যে তারা টেস্ট টিউবে ভাইরাসের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ভাইরাসকে অকেজো করছে কিনা। এই সমস্ত পরীক্ষা পাশ করলে তখন সরকারি যে সংস্থা পর্যবেক্ষণ করে সমস্ত ওষুধ উৎপাদনের নিয়ম কানুন- ভারতের ক্ষেত্রে CDSCO (Centre of Drug Standard Control Organization) ও আমেরিকার ক্ষেত্রে FDA (Food and Drug Administration) এর কাছে আবেদন করতে হয় পরীক্ষামূলক ভাবে মানুষের ওপর প্রয়োগ করার অনুমতি নেওয়ার। এই অনুমতি আসে ধাপে ধাপে। প্রথম ধাপে (ফেজ 1) শ'খানেক স্বেচ্ছাসেবকের ওপর দেখা হয়, পরের ধাপে (ফেজ 2) হাজার খানেক। যেহেতু মানুষের শরীর নিয়ে পরীক্ষা, সংস্থা দেখে নেয় সমস্ত নীতি এবং নিয়ম কানুন মানা হচ্ছে কিনা, এবং একবার অনুমতি পাওয়ার পর নিয়ম ভাঙার খবর এলে অনুমতি ফিরিয়ে নিতে পারে। সাধারণ ক্ষেত্রে এই প্রথম দু'ধাপই বছর খানেকের বেশি লেগে যায়, কারণ প্রতিটি স্বেচ্ছাসেবকের খেয়াল রেখে তাদের প্রতিটি তথ্য নথিভুক্ত করতে হয়। একচুল এদিক ওদিক হলে চলে না। কোনও রকম ক্ষতির কোনও আভাস পেলেই দেখতে হয় কী কারণ, এবং সবরকম চেষ্টা করা হয় যাতে এধরনের ঘটনা আর না ঘটে। যদি এলার্জি বা অন্য কোনও প্রতিক্রিয়া খুব বেশি জনের মধ্যে দেখা যায়, তাহলে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয় না। সেই ভ্যাকসিন তখন প্রায় কেঁচে গন্ডুষ করে নতুন রূপে আবার ফেজ 1 এ ফিরতে না পারলে সে হারিয়ে যায়। ফেজ 1 ও 2 এর পরে থাকে ফেজ 3। এখানে অনেক বেশি ধরণের মানুষকে নিয়ে পরীক্ষা চালানো হয়, এবং হ্যাঁ জাতিভেদটা একমাত্র এখানেই কাজে আসে। বিভিন্ন উৎসের জাতি, বিভিন্ন ভৌগোলিক অবস্থানের জাতি, লিঙ্গ, বয়স, শারীরিক গঠন ইত্যাদি যত রকম বিভিন্নতা আনা যায়, ততই ভাল বোঝা যায় যে ভ্যাকসিন কতটা নিরাপদ। যদি ক্ষতিকারক প্রতিক্রিয়া হয়ও, সেটা কত জনের এবং যাদের হচ্ছে, তাদের কোনও প্যাটার্ন আছে কিনা। ফেজ 3তে কম করে 15000 স্বেচ্ছাসেবক নিতে হয়। এখন নিয়ম হয়ে গেছে যে একই ওষুধ বা ভ্যাকসিন আলাদা আলাদা দেশে ব্যবহৃত হলে, বা বিদেশি ভ্যাকসিন ভারতে আনলে ভারতে আলাদা করে ট্রায়াল করতে হবে-একেবারে ফেজ 1 থেকে।
তিনটের মধ্যে কোভিশিল্ডই এগিয়ে
এবার বলি 3 জানুয়ারি যে দুটি ভ্যাকসিন আপতকালীন ব্যবহারের জন্য ছাড় পেল, তাদের তফাৎ কোথায়। বিজ্ঞানের তফাৎটায় পরে আসছি, কিন্তু নীতিগত ভাবে অক্সফোর্ড -AstraZeneca থেকে আমদানি করা প্রযুক্তি দিয়ে বানানো সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার (SII) কোভিশিল্ড কিন্তু অনেক এগিয়ে। এদের এই প্রযুক্তি নির্ভরযোগ্যতা অন্য অন্য ক্ষেত্রে প্রমাণিত। শুধু তাই নয়, ব্রিটেনের দলটি ব্রিটেন এবং ব্রাজিলে একসাথে ট্রায়াল শুরু করেছে, এবং সেই সঙ্গে ভারতেও পাশাপাশি ট্রায়াল করেছে SII। ভারতের চাহিদা মেটানোর জন্য বিশাল পরিকাঠামো বানানো শুরু হয়েছে সেই লকডাউনের সময় থেকেই, এবং দেখে নেওয়া হয়েছে যে সাধারণ ফ্রিজেই এই ভ্যাকসিন রাখা যাবে। মোটামুটি বিশ্বাসযোগ্য তথ্য দেওয়া হয়েছে CDSCOকে, যার বেশ কিছু জনগণের কাছে উন্মুক্ত। আর একটা বিশ্বাসযোগ্যতা হল এই একই ভ্যাকসিন ছাড়পত্র পেয়ে গেছে যুক্তরাজ্যে পাঁচ দিন আগে।
কিন্তু প্রচুর আপত্তি উঠছে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাকসিন নিয়ে। একদম শুরু থেকেই ধর তক্তা মার পেরেক করে জিতে যাওয়ার প্রচেষ্টা। এই ভ্যাকসিনটি ভারত সরকারের National Institute of Virology (NIV) ও ভারত বায়োটেকের যৌথ প্রচেষ্টায় নির্মিত। ভারতে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসকে গবেষণাগারে গজাতে পেরেছে NIV। সেই ভাইরাসকে কৃত্রিম ভাবে গজানো মানবকোষে অর্থাৎ সেল কালচার এর মধ্যে বিশাল স্কেলে গজাচ্ছে ভারত বায়োটেক- তাদের বিশেষ ভাবে সুরক্ষিত পরিকাঠামোতে, যাকে বলা হয় Biosafety level III. এই ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করেই তৈরি হবে Covaxin। এখানে সুবিধে কতকগুলো আছে- যেহেতু ভ্যাকসিনে ব্যবহৃত ভাইরাসটি দেশজ, কাজেই এদেশের লোকের ওপর ভাল কাজ করা উচিত- যতক্ষণ না কোনও সাংঘাতিক পরিবর্তনকারী মিউটেশন এর আবির্ভাব না হয়। তাছাড়া এই ভ্যাকসিনের খোলনলচে সবই করোনার, কাজেই যে কোনও রকম করোনা ভাইরাসে কিছুটা প্রতিষেধন দেখানো উচিত।
কিন্তু এত সব ভাল ভাল- বিশ্বাস করব কী করে? যারা জুলাই এর প্রথম সপ্তাহে বলে 15 আগস্টের মধ্যে ট্রায়াল শেষ করা যাবে তাদের? আজ অবধি এদের বিশ্বাসযোগ্য তথ্য মাত্র 755 জনের ওপর করা ফেজ 2 অবধি। ওদের 26000 জনকে নিয়ে ফেজ 3 ট্রায়াল করার কথা। ষোলই নভেম্বর ওরা জানিয়েছে ফেজ 3 শুরু করতে চলেছে, এবং 22শে ডিসেম্বর পর্যন্ত মাত্র 13,000 স্বেচ্ছাসেবক জোগাড় হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে বলতে পারি, ভ্যাকসিন ইনজেকশন দেওয়ার পর কম করে 3 থেকে 4 সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হয় কোনও এন্টিবডি তৈরি হল কিনা দেখার জন্যে। বেশির ভাগ ভ্যাকসিনেই তারপর আবার একটা বুস্টার ডোজ দিতে হয়, না হলে প্রতিরোধ ক্ষমতা যেটুকু তৈরি হয়েছিল, তা পড়ে যায়। আর কোভিড যেহেতু নতুন রোগ, এখনও আমরা জানি না পর্যন্ত যে রোগ হলে বা ভ্যাকসিন দিলে ঠিক কতদিন পর্যন্ত বলা যায় প্রতিরোধ ক্ষমতা অবশিষ্ট থাকে।
এবার বুঝুন ব্যাপারটা! আনকোরা ভ্যাকসিন! সে কাজ করে কিনা, ক্ষতি করে কিনা, কিছুই জানা নেই, তাকে অনুমতি দিয়ে দেওয়া হল। অবৈজ্ঞানিক ভাবে আর যাই হোক, আত্মনির্ভরতা আসে না।
অভ্যাগতকে দেখে তক্তাতে পেরেক মেরে না হয় আসন খাড়া করলেন, এবার হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়লে? All India Drug Action Network এর তরফ থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়েছে যে Covaxin এর অনুমোদন অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হোক। গগনদীপ কাঙ্গ-এর মতো বিজ্ঞানী, যিনি দেশি রোটাভাইরাস ভ্যাকসিনের আবিষ্কারে বিরাট অবদান রেখেছেন, সোচ্চার হয়েছেন সরকারের এই অবিমৃষ্যকারিতার বিরুদ্ধে।
এর মধ্যে একটা নতুন আশার আলো উঁকি দিচ্ছে। Cadila-এর সৃষ্টি নতুন DNA ভ্যাকসিন 1048 জনকে নিয়ে ফেজ 2 শেষ করেছে, তাদের ফেজ 3 এর অনুমতি দেওয়া হয়েছে, এবং এটিও দিশি। Cadila এর সঙ্গে ভারত সরকারের Department of Biotechnology হাত মিলিয়েছে, অনুদান দিয়েছে। এই ভ্যাকসিন বানানো বাকি দুটির চেয়ে অনেকটাই সহজ, এর জন্য Covishield বা Covaxin এর মত সেল কালচার করার পরিকাঠামো বা অতিরিক্ত জৈব সুরক্ষা (high bio safety level) সম্পন্ন পরিকাঠামো লাগে না। বড়সড় মিউটেশন দেখা দিলে তার জন্য নতুন ভ্যাকসিন তৈরি করতে খুব কম সময় লাগে, যদিও বিভিন্ন স্তরের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল নতুন করেই করতে হয়।
আপনার জন্য ভ্যাকসিন কবে এবং কোনটা?
কোন ভ্যাকসিনটা নেবেন? সত্যি কথা বলতে কি কোনও চয়েস আছে কি? সরকার গত কয়েকদিন ধরে টিকাকরণের মহড়া দিল- কীভাবে কাকে টিকা দেওয়া যেতে পারে। যেহেতু এই টিকাতে ইনজেকশন লাগবে, পোলিওর টিকার মত নাক টিপে "দো বুঁদ" খাওয়ানোর মতো সহজ কাজ নয়, হিসেব করতে হয়েছে কতজন কর্মীকে নিয়োগ করতে হবে। সারা পৃথিবীতে এটাই ঠিক হয়ে গেছে যে প্রথমে টিকা দেওয়া হবে কোভিড যোদ্ধাদের- স্বাস্থ্যকর্মী, সাফাই কর্মী, পুলিশ বা প্রতিরক্ষা কর্মীদের। ভারতে এই সংখ্যাটা 70.33 লাখ। টিকাকরণে 2.34 লাখ কর্মীকে নিয়োগ করতে হবে। 51,459 সরকারি এবং 1,62,933 বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে টিকাকরন করা যাবে। CoWin নামে নতুন পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করতে হবে। আপনার পালা কবে আসবে? ওই 70.33 লাখের মধ্যে না হলে জানা নেই, কারণ এখনও তর্ক চলছে এরপরে কাদের দেওয়া হবে। প্রথমে বলা হয়েছিল বৃদ্ধদের আগে। এখন একটা যুক্তি আনা হয়েছে যে কর্মক্ষম বয়স অর্থাৎ 40-65 কোভিডে বেশি আক্রান্ত হয় বৃদ্ধদের চেয়ে অনেক বেশি, কারণ বৃদ্ধরা বেশিরভাগই ঘরের মধ্যে সুরক্ষিত থাকেন- বাইরে কম বেরোন। এখনও অবশ্য কোনও কিছু স্থির হয়নি এ বিষয়ে।
আপনার মনে হতেই পারে-তিন রকম ভ্যাকসিন তো এসেই গেল, কোনটা ছেড়ে কোনটা নিই। এই প্রবন্ধ পড়ার পর হয়তো বুঝতে পারবেন, একটা অন্ততঃ জুটুক আগে- সেটার সম্ভাবনাই এখন অনেক দূরে। ভ্যাকসিনের এতই আকাল যে আমেরিকাতে ভাবা হচ্ছে কম মানুষকে দুটো ডোজ না দিয়ে যদি বেশি মানুষকে একটা করে ডোজই দেওয়া যায়। পয়সা দিয়ে লাইন ডিঙোবেন? আমেরিকায় বলা হয়েছে এরকম কিছু প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। কিন্তু দুর্নীতি নিমজ্জিত আমাদের দেশ ভারতে? পয়সা দিয়ে বিদেশ থেকে আমদানি করবেন? সে সুযোগ কম। সোজাপথে সরকার যদি অনুমতি না দেয়, তবে কি বাঁকা পথে সম্ভব? মনে রাখবেন প্রতিটা ভ্যাকসিনেরই প্রয়োজন শীতল তাপমাত্রা। লুকিয়ে চুরিয়ে আমদানি করতে গেলে ঠাণ্ডার ব্যাপারটা বজায় রাখা শক্ত। কাজেই স্মাগল করলেও কাজ করবে কিনা সন্দেহ। এই মুহূর্তে বিদেশ গিয়ে টিকা নিয়ে আসাও অসম্ভব। আপনার চয়েস একটাই এখন- নাম নথিভুক্ত করা বা না করা। তাড়াহুড়ো না করে রয়ে সয়ে দেখতে পারেন, অন্য দেশে, বা অন্যদের ওপর সত্যি সত্যি ভ্যাকসিন কতটা প্রতিরক্ষা দিচ্ছে। একটা কথা কিন্তু অনুমোদনের হিড়িকে অনুচ্চারিত রয়েছে: যারা সেরোপজিটিভ, তাঁদের কী হবে? আমাদের দেশের বিরাট সংখ্যার মানুষের কিন্তু সেরোপজিটিভ – অর্থাৎ ইতিমধ্যেই যাঁদের শরীরে এন্টিবডি তৈরি হয়ে গিয়েছে – এমন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের একটা বড় অংশ এর মধ্যে পড়বেন এবং এঁদের টিকাকরণের ব্যাপারে সারা পৃথিবীতে কোনও সর্বসম্মত নীতি তৈরি হয়নি। যে নিরানব্বই লক্ষ সেরে উঠেছেন, তারাও কি লাইনে থাকবেন? যদি সেরোপজিটিভ এবং রোগমুক্তদের টিকাকরণের আওতার বাইরে রাখা হয়, তবে অন্যদের সম্ভাবনা আছে আগে আগে টিকা পেয়ে যাওয়ার।
ড: সুস্মিতা ঘোষ, ডায়াগনোরাইট-এর প্রতিষ্ঠাত্রী এবং জৈব-রসায়নবিদ, বিটস পিলানির পরামর্শদাত্রী। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের পোস্ট ডক্টরাল ফেলো সুস্মিতার ডায়াগনোরাইট একটি সম্পূর্ণ মহিলা পরিচালিত স্টার্ট-আপ সংস্থা, যার লক্ষ্য সকলের জন্য সুলভে বিজ্ঞানসম্মত আধুনিক ডায়গনস্টিক্স।