4thPillar


সুপ্রিম কোর্টকে কাঠগড়ায় তুললেন বিচারপতি

4thPillars ব্যুরো | 14-02-2020June 19, 2023
সুপ্রিম কোর্টকে কাঠগড়ায় তুললেন বিচারপতি

দুই বছরেরও একটু বেশি সময় আগে (১২ জানুয়ারি, ২০১৮) সুপ্রিম কোর্টের চারজন বিচারপতি নজিরবিহীন ভাবে একযোগে সাংবাদিক সম্মেলন করে তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের কাজের প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, প্রধান বিচারপতি যে ভাবে গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলি বিচারের জন্য অপেক্ষাকৃত কম অভিজ্ঞ বিচারপতিদের এজলাসে পাঠাচ্ছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয়। তাঁদের এই অভিযোগ প্রধান বিচারপতি মিশ্রের কার্যপদ্ধতিতে স্বচ্ছতার অভাবের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করলেও পরোক্ষ ইঙ্গিত ছিল বেছে বেছে স্পর্শকাতর মামলাগুলি অভিজ্ঞ বিচারপতিদের এড়িয়ে নবীনদের দেওয়ার সম্ভাব্য অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্যের দিকে। সেই চার বিচারপতির অন্যতম রঞ্জন গগৈ পরে নিজে প্রধান বিচারপতি হয়ে অবসর নেন। কিন্ত তিনি প্রধান বিচারপতি থাকাকালীন যেমন আগের পরিস্থিতি সংশোধনের কোনও উদ্যোগ নেন নি, তেমনই তাঁর আমলে সুপ্রিম কোর্টের নেওয়া বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে অনেক বিরূপ প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এবার আর একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এ.পি.শাহ প্রকাশ্যেই সুপ্রিম কোর্টের কাজকর্ম নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ।

 

বিচারপতি শাহের অভিযোগ, রাষ্ট্র (ক্ষমতাসীন সরকার) যাতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে সংখ্যালঘিষ্ঠের উপর জোর করে তার মতামত বা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে না পারে, যেটা দেখা সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক কর্তব্য। কিন্তু, বর্তমানে সুপ্রিম কোর্ট যে ভাবে কাজকর্ম করছে তাতে সুপ্রিম কোর্টকে রাষ্ট্র বা ক্ষমতাসীন সরকারের থেকে আলাদা করে চেনা যাচ্ছে না। সুপ্রিম কোর্টের এহেন আচরণ অতীতেও দেখা গিয়েছে। ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্থার আমলে সুপ্রিম কোর্ট যে ভাবে রাষ্ট্রের (ক্ষমতাসীন সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করে মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তসমূহকে বৈধতা দিয়েছিল, তা নিয়ে জরুরি অবস্থার অবসানে অনেক কথা হয়েছে। কিন্ত জরুরি অবস্থা চলাকালীন প্রকাশ্যে সুপ্রিম কোর্টের সমালোচনা করা যায়নি। বিচারপতি শাহের প্রকাশ্য সমালোচনা থেকে স্পষ্ট যে এখন অবশ্য তা করা যাচ্ছে। গত সোমবার দিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বক্তা হিসাবে বিচারপতি শাহ তাঁর ভাষণে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকার পর্যালোচনা করে তার কড়া সমালোচনা করেন। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি শাহ কাশ্মীর ইস্যু, অযোধ্যা মামলা, এন আর সি-র মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা  নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। একই সঙ্গে বর্তমান সুপ্রিম কোর্টে যে ভাবে গুরুত্বপূর্ণ মামলার আশু বিচারবিবেচনার বদলে তা ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে এবং ক্রমশই বিভিন্ন স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ মামলার তথ্য প্রকাশ্যে আনার বদলে তা সরকারকে সিল করা খামে জমা দিতে হচ্ছে, তা নিয়েও তিনি কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। প্রয়াত বিশিষ্ট গান্ধীবাদী ও স্বাধীনতা সংগ্রামী প্রয়ত এল.সি.জৈনের স্মৃতিতে বক্তৃতা দিতে এসে বিচারপতি শাহ তাঁর বক্তব্যের প্রেক্ষিত বিশদে ব্যাখ্যা করে বলেন, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল যে ভাবে তাদের সাম্প্রদায়িক বিভাজনের  রাজনীতি চালাচ্ছে, তাতে গোটা দেশে মেরুকরণ হয়ে যাচ্ছে। ঘৃণা ও বিদ্বেষপূর্ণ ভাষণ এখন নিত্যকার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং প্রথম সারির নেতারাই এই ঘৃণা ছড়াতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিচারপতি শাহের মতে, "…দেশ জুড়ে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পরিচয়কে ভিত্তি করে এমন একটা বিভেদকামী উগ্র জাতীয়তাবাদী ভাবনা ছড়ানো  হচ্ছে, যা উদ্বেগের কারণ।'

 

দেশের অগণিত মানুষের অভিজ্ঞতাপ্রসূত ধারণাকেই পুষ্ট করে বিচারপতি শাহ আরও বলেন, সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে কেউ সরকারের নীতি ও কাজকর্মের বিরোধিতা বা সমালোচনা করলেই তাকে সঙ্গে সঙ্গে দেশদ্রোহী তকমা দেওয়া হচ্ছে। এই হতাশার আবহের মধ্যেই দেশ জুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলনের মধ্যে বিচারপতি শাহ ভারতের গণতন্ত্র নিয়ে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন। ছাত্ররাই যে দেশের ভবিষ্যৎ সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, যখন জে এন ইউ, আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি, জামিয়া মিলিয়া, সেন্ট স্টিফেন্স সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ছাত্ররা সি এ এ-র মতো একটি অনৈতিক এবং অসাংবিধানিক আইনের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উপায়ে প্রতিবাদী আন্দোলন করে, তখন যে কোনও গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিকমাত্রই তা নিয়ে গর্ব বোধ করতে পারেন। একে নিছক প্রতিবাদী আন্দোলন হিসাবে দেখলে ভুল হবে। মনে রাখতে হবে, এই আন্দোলন প্রমাণ করে দিয়েছে যে ভারতীয় রাষ্ট্রের সংবিধানের রূপকাররা এই দেশকে যে সাংবিধানিক মূল্যবোধের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন, দেশের তরুণ প্রজন্ম সেই মূল্যবোধের গুরুত্ব উপলব্ধি করে, তাতে বিশ্বাস করে এবং তাকে রক্ষা করতে সচেষ্ট। নিজের কর্মজীবনে হাইকোর্টে থাকাকালীন বিচারপতি শাহ সংবিধানের সেই উদারনৈতিক মূল্যবোধকে মর্যাদা দিয়ে সমকামিতাকে দন্ডনীয় অপরাধ হওয়ার অভিযোগ থেকে মুক্ত করে রায় দিয়েছিলেন। পরে তা সুপ্রিম কোর্টের মান্যতা পায়। বর্তমানের হতাশাব্যঞ্জক চিত্রের মধ্যেই তিনি মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি যে বিগত কয় বছরে সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের মর্মার্থের গভীরে গিয়ে সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় একাধিক মূল্যবান রায়ও দিয়েছে। (তারমধ্যে উল্লেখ্য, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সম্মতিক্রমে যৌন সম্পর্ককে অপরাধ হিসাবে গণ্য করাকে খারিজ করে দেওয়া, ন্যায়লয়কেও তথ্যের অধিকারের আওতায় আনা এবং ব্যক্তির তথ্য গোপন রাখার অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার রায়)। দেশের সাধারণ মানুষের মনে আইন ও সংবিধানের প্রতি যে গভীর আস্থা রয়েছে, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, দেশের সংবিধান রক্ষার এবং নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষার গুরুদায়িত্ব সুপ্রিম কোর্টের উপরই ন্যাস্ত রয়েছে। এবার সুপ্রিম কোর্টকে আত্মানুসন্ধান করে দেখতে হবে যে সাধারণ মানুষের এই আস্থাও বিশ্বাসের মর্যাদা তারা রক্ষা করতে পারছে কি না। তাঁর মন্তব্য, “দেখে তো মনে হচ্ছে যে সুপ্রিম কোর্ট ক্রমশই সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার প্রতিষ্ঠানের বদলে সরকারি আদালতে পরিণত হয়ে চলেছে।“ এ কথা বলার অর্থ, সুপ্রিম কোর্টের আচরণে একে সরকারি বিভাগ বলে ভ্রম হতে পারে। বিশেষ করে যখন সুপ্রিম কোর্টের একাধিক রায় বা নির্দেশ সরকারি এক্তিয়ারের বিষয়ে হয়ে চলেছে। বিচারপতি শাহের ভাষণ থেকে উঠে আসা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ এখানে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হল:

 

গুরুত্বপূর্ণ মামলার অগ্রাধিকার:

বর্তমান সুপ্রিম কোর্টের কাজেকর্মে নাগরিক অধিকার সংক্রান্ত মামলাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিচার করার ক্ষেত্রে উদাসীনতা উদ্বেগজনক। কাশ্মীরের জন্য ৩৭০ ধারার বিলোপের বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলার আবেদন জমা পড়লেও সুপ্রিম কোর্ট তা জরুরি ভিত্তিতে শুনতে চায় নি। এমনকি কাশ্মীরের মানুষকে মাসের পর মাস গৃহবন্দী করে, গ্রেফতার করে, ইন্টারনেট বন্ধ রেখে সেনাবাহিনীর হাতে ছেড়ে দেওয়ার পরেও সূত্র নিয়ে মামলার আবেদন শুনতে না চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য ছিল, এ নিয়ে এত তাড়াহুড়োর কী আছে? নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে পরিচয় গোপন রেখে রাজনৈতিক দলের তহবিলে অর্থদানের বিরুদ্ধে মামলায় ওই বন্ড বাতিল করার দাবি জানালেও সুপ্রিম কোর্ট কিছুতেই স্থগিতাদেশ দিতে রাজি হয়নি। বরং, সরকারকে সিল করা খামে দাতাদের নাম দিতে বলা হয় এবং জানানো হয় যে তা পরীক্ষা করে দেখা হবে। ইতিমধ্যে লোকসভা নির্বাচন ও কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচন হয়ে গেছে। কিন্তু গোপন তথ্য খতিয়ে দেখার কাজ এখনও হয় নি। সি.এ.এ-এর বিরুদ্ধে গত ডিসেম্বর মাসেই সুপ্রিম কোর্টে এক গুচ্ছ আবেদন জমা পড়ে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি তা গ্রহণ না করে বলেন, আগে দেশে হিংসাত্মক কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে, তারপরে শুনানি শুরু হবে। যেন অধিকার রক্ষার বিষয়টি নাগরিকদের সু-আচরণের উপর নির্ভর করে। ওই সময় যেমন হিংসাত্মক কার্যকলাপ ঘটেছিল, তেমনই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের উপর পুলিশি হিংসার ঘটনাও ঘটেছিল। পরে সুপ্রিম কোর্ট এই গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি একমাস পিছিয়ে দেয়।

 

এন আর সি:

বিভিন্ন বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা যে ক্রমশই বদলে যাচ্ছে, এবং সংবিধানের রক্ষাকর্তার ভূমিকার বদলে তা সরকারি কাজের দোসর হয়ে উঠছে, তার সবচেয়ে বড় নজির এন আর সি নিয়ে আদালতের অতিসক্রিয় ভূমিকা। অসমের জমি, অভিবাসী শ্রমিক ও সাংস্কূতিক পরিচয়কেন্দ্রিক সমস্যার সমাধান খুঁজতে এন আর সি করার কথা হয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সেখানে হস্তক্ষেপ করে অসমের বাসিন্দাদের উপরই নাগরিকত্ব প্রমাণের বৈধ নথিপত্র দেখানোর দায় চাপিয়ে দেয়। যে কাজটা একেবারেই সরকারি প্রশাসন ও আমলাদের করার কথা, সেটা সুপ্রিম কোর্ট সাধারণ মানুষের উপর চাপিয়ে দেয়। যে হেতু সুপ্রিম কোর্টের তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ নিজেই অসমের এন আর সি প্রক্রিয়ার তত্ত্বাবধান করছিলেন, তাই এন আর সির বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এরফলে নথিপত্র সংগ্রহ করতে গিয়ে লক্ষ লক্ষ গরিব মানুষ চরম বিপদে পড়েন।তাঁদের অনেকের নামই নথিতে সামান্য বানান ভুলের মতো কারণে বাদ দেওয়া হয়।

 

কাশ্মীর:

২০১৯ সালের অগাস্টে কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা ও অধিকার সরকার কেড়ে নেওয়ার পর মানুষ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। এক গুচ্ছ আবেদন জমা পড়ে। কিন্তু ছয় মাসেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত, কিন্ত সুপ্রিম কোর্ট কোনও রায় দিতে পারেনি। এক কথায়, সংবিধানের রক্ষক হিসাবে নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষার যে কর্তব্য সুপ্রিম কোর্টের ছিল, তা তারা পালন করতে ব্যর্থ।

 

অযোধ্যা:

সুপ্রিম কোর্ট স্বীকার করে যে ১৯৪৯ সালে হিন্দুরাই গোপনে বাবরি মসজিদের অভ্যন্তরে রামলালার মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেছিল এবং ১৯৯২ সালে তারা মসজিদ ধ্বংস করে দেয়। এই কাজ বেআইনী বলে স্বীকার করার পরেও মসজিদের জমি হিন্দুদের মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য দেওয়ার বিধানের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। কারণ, মনে হতেই পারে যে যারা বেআইনী কাজ করল, আদালত তাদেরই পুরস্কৃত করল। বাস্তবিক, এই বিষয়টি আদৌ আদালতের বিচার্য বিষয় হওয়া উচিত ছিল কি না, সে প্রশ্নও উঠেছে। মনে রাখতে হবে, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরে নরসিংহ রাও সরকার সুপ্রিমকোর্টের কাছে অযোধ্যায় প্রাচীনকালে রামজন্মভূমি ছিল কি না প্রশ্নটির মীমাংসা করতে প্রস্তাব দিলে তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি বেঙ্কটচালাইয়া তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন, কারণ, সেটি আদালতের বিচার্য বিষয় হতে পারে না। তেমনই, অযোধ্যা বিবাদের মীমাংসার প্রশ্নটি আদালতে না হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্রণবিদ্বেষেী ব্যবস্থার অবসানে সাদা-কালোর বিবাদ মেটাতে যেমন ট্রুথ কমিশন গড়া হয়েছিল, তেমন কিছু করা যেত।


New
বিদায় পিটি নায়ার: কলকাতার ইতিহাসবেত্তা
এগজিট পোল মিলে গেলেও যে প্রশ্ন উঠবেই
কংগ্রেস সেঞ্চুরি না করলে কে রুখবে বিজেপিকে?


Other Writings by -4thPillars ব্যুরো | 14-02-2020

// Event for pushed the video