কোনওদিন ঝিরঝিরে বৃষ্টির সময়ে জালের দরজার ভিতর থেকে দেখেছেন কি জালের উপর বৃষ্টি বিন্দু মিলিয়ে গেল? সেই ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টির মাঝে বাইরে এসে দেখুন হয়তো বৃষ্টিকে দেখাও যাচ্ছে না, কিন্তু Raindrops keep falling on my head... অনুভবে জানতে পারছেন?
না রোমান্টিক কাহিনি লিখতে বসিনি। এই উদাহরণগুলো দিলাম, কারণ বোঝাতে চাই যে বড় বড় ছিদ্রওয়ালা জাল যদি বৃষ্টি বিন্দুকে ফিল্টার করতে পারে, ওর চেয়ে অনেক সূক্ষ্ম ছিদ্র বিশিষ্ট যে কোনও কাপড়ের ঢাকাই পারবে, অন্তত কিছুটা পারবে করোনা ভাইরাসকে আটকে রাখতে। যখন কোনও ঢাকা থাকবে না করোনা সোজা বর্ষিত হতে পারে মাথায়, মুখে, নাকে, হাতে।
বিশ্বাস করুন, এই মুহূর্তে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইটা কিন্তু বেশিরভাগই নাক-মুখ ঢাকা আর না ঢাকা নিয়ে। নাক এবং মুখ দুটোই ঢাকতে হবে- বিশেষ করে নাক, করোনার প্রবেশ পথ এই দুটোই। বিশেষ করে নাক কেন? এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিচ্ছি পরে, কিন্তু তার আগে কতগুলো কর্ম পদ্ধতি আর সতর্কবিধি বলে নিই:
1. প্রথম বিধি: যতটা সম্ভব বাইরে বেরোনো বন্ধ।
জনবহুল জায়গায় যাবেন না। যদি আপনি বড় শহরের বাসিন্দা হন, তবে আপনার বাড়ির বাইরের প্রতিটা জায়গাই জনবহুল। কাজেই ভীষণ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোবেন না। চিন্তা ভাবনা করে নিন প্রয়োজনীয় কাজগুলো কী করে বাড়ি বসেই করে ফেলা যায়। করোনাকালে অনেকেই কর্মচ্যুত হয়ে সাপ্লাই-এর কাজ শুরু করেছে। তাদের থেকে বাড়ি বসেই যদি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পেয়ে যান, সেই ব্যবস্থাই করুন। আগে যে সব কাজের জন্য অন্য কোথাও গিয়ে কারও সঙ্গে দেখা করতে হত, চেষ্টা করে দেখুন ফোনে, ই-মেল বা ভিডিও কলে সেই কাজগুলো সেরে ফেলা যায় কিনা। জানি বেশিরভাগ এখন এই পদ্ধতিই নিয়েছে, কিন্তু যদি এখনও কেউ কেউ বাকি থাকেন, তাই পুনরাবৃত্তি করলাম।
2. বেশিরভাগকে ঘরবন্দি থাকার জন্যই কিছু মানুষকে বের হতেই হবে।
সবার কাজ তো বাড়ি বসে হবে না, অনেককে রোজ কর্মস্থলে যেতেই হবে। অনেককে সপ্তাহে দু'দিন বা তিনদিন বেরোতে হয়। বাস, ট্রেন নিতে হয় অনেককেই। এমতাবস্থায় প্রথম নিয়ম হল, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা। প্রশ্ন উঠতে পারে, আমি মাস্ক বা নাকমুখ ঢাকার আগে কেন শারীরিক দূরত্বের কথা তুললাম? ধরুন, কারও কাজ হল কাকভোরে উঠে ঝাঁট দেওয়া বা বাড়ি বাড়ি বাইরে থেকে দুধের প্যাকেট রেখে আসা। এসব ক্ষেত্রে যদি শুধু "নো টাচ' নয়, সতর্কভাবে একেবারেই কারও মুখোমুখি না হয়ে পুরো কাজটা করে ফেলা যায়, তাহলে মুখ ঢাকার প্রয়োজন হয়তো হবে না। কিন্তু যদি একজনের সঙ্গেও সশরীরে দেখা হয়, তাহলে মাস্ক পরতে হবেই এবং অনেকটা দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে। যদি কোনও কারণে একেবারেই দূরত্ব বজায় না রাখা যায়- যেমন ধরুন, অনেকক্ষণ বাদে একটাই বাস এল এবং তাতে ভিড় এবং সেটা ছাড়া অন্য কোনও যানবাহন নেই, তাহলে শুধু একটা নয়, একটার উপর আর একটা, দুটো মাস্ক পরতে হবে, যাতে নাক এবং মুখের চারপাশে কোনও ফাঁক না থাকে। গন্তব্যস্থল বাড়ি হলে প্রথম কাজ হবে মাস্কগুলো এবং সমস্ত জামা কাপড় সাবান জলে বা ওয়াশিং মেশিনে দিয়ে দেওয়া।
3. বাইরে বেরিয়ে গন্তব্যস্থল যখন কর্মস্থল।
তখন কিন্তু বিধি আরও অনেক জটিল। যানবাহনে আসার সময় অজানা কেরিয়ার নিঃসৃত করোনা মাস্ক এবং মুখের চামড়ার উপর লেগে থাকতে পারে। তার জন্য মাস্ক খুলে মুখ ধুয়ে ফ্রেশ একটি মাস্ক পরা যায়। কিন্তু এইখানে খুব সতর্ক হতে হবে। মাস্ক যখন খুলবেন, তখন ধারে কাছে মাস্কবিহীন অবস্থায় কেউ যেন না থাকে। এই রকম ফ্রেশ হওয়ার জায়গাটি অর্থাৎ কমন বাথরুম করোনাকালে সব চেয়ে ভয়ঙ্কর জায়গা। CDC বা WHO যাই বলুক না কেন করোনা বায়ুতাড়িত। ছ'ফুট যায়, না দশ বিশ ফুট যায়, না মাইলখানেক যায়, সেই তর্কটা কিছু কিছু বিজ্ঞানীর জন্য তুলে রাখি। নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, দশ ফুট বাই দশফুট, বা তার চেয়েও ছোট পাবলিক বাথরুমে কোনও সম্ভাব্য করোনাবাহী যদি মুখ ধোয়, বা কুলকুচি করে, হাঁচি কাশির কথা বাদই দিলাম, বাতাসে অনেকক্ষণ করোনা ভেসে অপেক্ষা করতে থাকবে পরবর্তী শিকারের। এক্সহস্ট ফ্যান না থাকলে সেটা আরও দীর্ঘায়িত হবে। এসি থাকলেও। কাজেই কর্মস্থলে যে বাথরুম অনেকে ব্যবহার করে, সেখানে লগবুক টোকেন ইত্যাদির মাধ্যমে দু'জনের মধ্যে কম করে দশ মিনিটের ব্যবধান রাখতে হবে। বাথরুমে মুখ ধোয়ার প্রয়োজন না থাকলে মাস্ক পরেই থাকতে হবে।
কর্মস্থলে যদি খাবার বা জল খেতে হয়, সেই সময়ে লক্ষ্য রাখতে হবে ধরে কাছে কেউ মুখোমুখি বসে আছে কিনা। মনে রাখতে হবে বায়ুবাহিত হয়ে করোনা সংক্ৰমণ করার সবচেয়ে সহজ পথ হল মুখোমুখি। কাজেই যদি ক্যাফেটেরিয়া ইত্যাদিতে বসতে হয়, তবে সেখানে ভিড় যাতে না হয় সেটা দেখা উচিত এবং বসতে গেলে পিঠোপিঠি বসা উচিত। কোনও কারণে অন্য কেউ মুখোমুখি এসে পড়লে? সচেতন ভাবে মুখ বা শরীর ঘুরিয়ে পাশ করে নিতে হবে। আমি জানি WHO নিশ্চয়ই এই ভেবে বলেনি, কিন্তু social distancing-এর একটাই উপযুক্ত অর্থ খুঁজে পেলাম মুখোমুখি হতে চাইলে মুখ ঘুরিয়ে নেওয়া। কথাবার্তা যত সম্ভব ফোনে সারতে হবে এক ঘরে থাকলেও। নাহলে, অনেক দূর থেকে। লিফ্টে একা যদি উঠতে না পারেন নেহাত, সেখানেও দেওয়ালের দিকে মুখ ঘুরিয়ে থাকবেন। এসি ঘর, বিশেষ করে সেন্ট্রাল এসি করোনার পক্ষে বড় বিপজ্জনক জায়গা। বিজ্ঞানীরা অনেকদিন আগেই পরীক্ষা করে দেখেছেন যে 22 ডিগ্রি ঠান্ডা বন্ধ ঘরে নভেল করোনা ভাইরাস বহুদিন জীবিত থাকে সেই ঘরের স্টেইনলেস স্টিল, প্লাস্টিক ইত্যাদি সারফেসে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকে পরবর্তী শিকারের অপেক্ষায়। কাজেই এই রকম ঘরে ভুলেও মাস্ক ঢিলে করা চলবে না।
4. দোকান বাজারে যখন যেতেই হবে।
এসি দোকান, ভিড় হলে, পরিহার করাই শ্রেয়। সবচেয়ে বিপজ্জনক হল এসি ওষুধের দোকান। এখানের খরিদ্দারদের মধ্যে মৃদু লক্ষণওয়ালা করোনা রোগী থাকার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। জ্বর জ্বর লাগছে তো ক্রোসিন কিনে আনি। সেই জ্বর covid-জনিত হতেই পারে। পাড়ার ওষুধের দোকানের সঙ্গে ফোনে ব্যবস্থা করতে পারলে ভাল হয়। সবচেয়ে ভাল হয় তারা হোম ডেলিভারি দিলে। কাউন্টারওয়ালা অন্য দোকানগুলিতে কোনও গ্যারান্টি নেই দোকানি বা অন্য খদ্দের সব সময়ে মাস্ক পরে আসে কিনা। দোকানি মাস্ক না পরলে সেই দোকানে ঢুকবেন না।
5. বাড়িতে থাকার সময়ে।
যাদের বাড়ির কেউ বেরোয় না, বা মাস্ক পরে অল্প স্বল্প বেরিয়ে ফিরে এসেই ভাল করে জামা কাপড় পাল্টে, স্নান করে ফেললে বাড়িতে মাস্ক পরার দরকার নেই। ডেলিভারি নেওয়ার সময় যদি no contact হয়, দরজার আড়াল থেকে উঁকি দিলে মাস্কের প্রয়োজন নেই, কিন্তু আগন্তুকের মুখোমুখি হতে গেলে মাস্ক পরেই যেতে হবে। বাড়িতে কোনও সাহায্যকারী এলে পুরো সময়ে প্রয়োজন হলে ডবল মাস্ক পরে থাকতে হবে। তার থেকে দূরে দূরে থাকা এবং কম কথা বলা শ্রেয়। এসি থাকলে বন্ধ রাখতে হবে এবং দরজা জানালা খুলে রাখতে হবে। গরম রান্নার পাত্রে করোনা থাকবে না, কিন্তু টেবিল টপ বা কাউন্টার টপ সাবান জল স্প্রে করে বা কাপড়ে ভিজিয়ে মুছে নিতে হবে। আগন্তুক ঠিকঠাক মাস্ক পরে এলে তবেই তাকে বাড়ির মধ্যে ঢুকতে দেবেন।
বাড়ির কেউ যদি কাজে বেরোয়, এবং কর্মস্থলে বা পথে ভিড় এর সম্মুখীন হতে হয়, তবে তার উচিত বাড়ির অন্যজনদের, বিশেষ করে "মরবিড' শারীরিক অবস্থার সদস্যদের থেকে দূরে দূরে থাকা। প্রশ্ন হচ্ছে, ছোট ফ্ল্যাট বাড়িতে কী করে দূরে থাকবে? চেষ্টা করতে হবে মুখোমুখি না হওয়ার, একসঙ্গে খাওয়া দাওয়া না করার এবং প্রয়োজন হলে বাড়িতেও মাস্ক পরে থাকার। প্রিয়জনদের জন্য এটুকু কষ্ট করতেই হবে। তবে হ্যাঁ, সারাদিন বাইরে পরে থাকা মাস্ক ঘরে এসেই ত্যাগ করতে হবে। ফ্রেশ মাস্ক পরতে হবে।
6. বিনোদনের জন্য বাইরে যাওয়া ও খাওয়া।
রেস্টুরেন্ট বা যদি নেহাতই বাইরে খেতে হয়, এবং সেখানে পরিবারের বাইরের লোকজন থাকে তাহলে মুখোমুখি খাওয়া চলবে না। ভিড় রেস্টুরেন্ট একেবারেই না। সিনেমা হল খুললে তাতে ভিড় হলে একেবারেই যাওয়া যাবে না। এক তৃতীয়াংশের কম ভর্তি থাকলে ডবল মাস্ক পরে খুব সাবধানে যাওয়া চলতে পারে। গ্যারান্টি নেই এত কাণ্ডের পরে আনন্দ পাবেন কিনা।
7. স্কুল।
বন্ধ রাখা উচিত। বাবা মায়েরা ভয় পাচ্ছেন শিশু অসুস্থ হবে। ভয়টা সেখানে নয়। শিশুদের নিয়ম মেনে মাস্ক পরিয়ে রাখা অসম্ভব। আবার শিশুরাই লক্ষণহীন বাহক হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। কাজেই শিশুরা সংক্ৰমিত করতে পারে স্কুলে শিক্ষক ও অন্য কর্মচারীদের। বাড়িতে বাবা, মা, দাদু, দিদা, এদের অনেকেরই মরবিড অবস্থা। কাজেই সংক্ৰমণ একবার এলে মারাত্মক হতে পারে। কলেজ ছাত্রদেরও এই বিষয়ে সংযম আশা করা বোকামি। কাজেই কলেজও হয় বন্ধ রাখা উচিত, নয়তো পালা করে ভিড় কমিয়ে ক্লাস করানো উচিত।
কাপড়ের মাস্ক অবশ্যই সুরক্ষা দেবে। সম্ভাব্য করোনার উৎসের কাছাকাছি যখন থাকবেন, তখন যা নাক এবং মুখ ঢাকে তাই অন্তত কিছুটা হলেও সুরক্ষা দেয়।
করোনার উৎস কী?
মূলত মানুষের মুখ এবং নাক। খুব সম্প্রতি Nature Immunology পত্রিকায় বেরিয়েছে যে করোনা রোগীর নাকে মুখের চেয়ে অনেক অনেক বেশি সংখ্যায় নভেল করোনা ভাইরাস বাসা বাঁধে। আর কে না জানে কথা বলার চেয়ে হাঁচিতে নাক-মুখ নিঃসৃত জলকণা বেশি জোরে বেরোয়, বা বেশি করে ছড়ায়। এই কারণেই হাঁচির আগে নাক ঢাকা বিধি, এবং মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীও সেটা লাইভ ডেমো দিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন, হাঁচিতে কি আমাদের সত্যিই কন্ট্রোল থাকে? মনে করুন বাজারে বা কাজে বেরিয়েছেন, দু' হাতে দুটো ব্যাগ। নাক ঢাকবেন কী দিয়ে? তার চেয়ে আগে থেকেই নাকটা ঢেকে রাখা ভাল কিনা? আপনার গায়ে কেউ হাঁচবে না, আপনিও কারও গায়ে হাঁচবেন না। কিন্তু ওই যে বলে, N95-ই কিনা মাত্র 95 শতাংশ আটকাতে পারে, নভেল করোনা তো অনেক ছোট!
এখানে মনে রাখতে হবে, যে যে পরীক্ষাগুলোর মাধ্যমে ফিল্টার করার ক্ষমতা মাপা হয় বা হয়েছে, তার কোনওটাতেই সত্যিকারের নভেল করোনা, সত্যিকারের মানুষের শরীরে কী ভাবে মাস্ক ভেদ করে ঢুকতে পারে, বা বেরোতে পারে, দেখা হয়নি। সবই করা হয়েছে নানা ধরনের জড় কণিকা কী ভাবে নানা ফিল্টারের মধ্যে দিয়ে যায় সেগুলো মাপার চেষ্টা করে। আসল মানুষের মুখ, যেখানে উঁচু নিচু আছে, নিশ্বাস প্রশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে ওঠে নামে, কাপড়ের মাস্ককে আরও ভাঁজ করে দেয়, সেরকম কোনও পরীক্ষাই করা হয়নি নভেল করোনার সঙ্গে। তবে কাপড়ের মাস্ক পরে জনগণের সংক্ৰমণ কমেছে, এরকম কিছু পরীক্ষার কথা শোনা গেছে। আমি অবশ্যই স্বাস্থ্যকর্মীদের কথা বলছি না যাদের পরীক্ষিত করোনা রোগীদের সঙ্গে অনেক সময়ে 6 ইঞ্চিরও কম দূরত্বে কাজ করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এদের জন্য ঠিকঠাক গুণমানের, ঠিকঠাক ফিটিং এর N95-ই প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের এই পোড়া দেশ স্বাস্থ্যকর্মীদের সব সময়ে তাও ঠিক করে দিতে পারে না।
একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, যে কোনও ক্ষতিকারক জিনিস ক্ষতি করে বেশি যখন সে কম দূরত্বে, বেশি সময় ধরে, বেশি সংখ্যায় আক্রমণ করতে পারে। একজন সাধারণ মানুষের রিস্ক একজন স্বাস্থ্যকর্মীর চেয়ে বেশ খানিকটা কম, এবং সেই কম রিস্কটুকু সামাল দেওয়ার ক্ষমতা কাপড়ের মাস্কের আছে, যদি সেই মাস্ক ঠিক করে পরা হয়।
1. অবশ্যই নাক এবং মুখ ঢাকবে, এবং মুখের চামড়ার মাঝে কোনও ফাঁক থাকবে না।
2. মাস্কের ইলাস্টিক ঢিলে হলে সে মাস্ক পরা চলবে না, কারণ সে সময় মাস্ক বারবার নেমে আসতে পারে। দড়ি বাঁধা মাস্ক পরা চলতে পারে সে ক্ষেত্রে।
3. কাপড়ের মাস্ক প্রতিদিন ধুতে হয়। যদি একাধিক ব্যবহার হয়ে থাকে, সবগুলো।
4. মাস্কের বাইরের দিকে হাত লাগাবেন না, কারণ সম্ভাব্য ভাইরাস সেখানে জমা হয়ে থাকতে পারে। মাস্ক খোলার সময়ে পিছন দিক থেকে খুলে বাইরের দিকটা ভাঁজ করে ভেতরে এনে (যাতে বাইরের দিকে হাত না পড়ে) সেইভাবে সাবান জলে দিতে হবে।
5. সৌখিন মাস্ক, রঙ-বেরঙের মাস্ক অসুবিধে নেই, যদি সে টাইট ফিটিং হয়। 6. মাস্ক বহু ব্যবহারে সুতো উঠতে শুরু করলে তা আর পরা উচিত নয়, কারণ সম্প্রতি একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে যে সুতির মাস্কের রোঁয়া অর্থাৎ লিন্ট কথা বলার সময়ে বাইরে উৎক্ষিপ্ত হয়। এই লিন্টের সঙ্গে নভেল করোনারও উৎক্ষিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।
সবশেষে আবার মনে করাই , দু'জন মানুষ, মুখোশধারী হয়ে কাছাকাছি এলে, করোনা বিনিময়ের সম্ভাবনা অনেকটাই হ্রাস পায়। কাজেই মাস্ক পরুন, মাস্ক পরান, যে মাস্ক পরে নেই, তাকে হয় শাসন করে মাস্ক পরান, নয় তার সাহচর্য পরিহার করুন।
ড: সুস্মিতা ঘোষ, "ডায়াগনোরাইট'-এর প্রতিষ্ঠাত্রী এবং জৈব-রসায়নবিদ, বিটস পিলানির পরামর্শদাত্রী। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের পোস্ট ডক্টরাল ফেলো সুস্মিতার ডায়াগনোরাইট একটি সম্পূর্ণ মহিলা পরিচালিত স্টার্ট-আপ সংস্থা, যার লক্ষ্য সকলের জন্য সুলভে বিজ্ঞানসম্মত আধুনিক ডায়গনস্টিক্স।