দেং জাওপিঙ-এর সেই বিখ্যাত উক্তির কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। দেন বলেছিলেন, যতক্ষণ একটা বিড়াল ইঁদুর ধরছে, ততক্ষণ সেটি কালো বিড়াল না সাদা বিড়াল তাতে কী আসে যায়? চিনের মুক্ত বাজার অর্থনীতির ক্ষেত্রে এই কথাটি প্রযোজ্য এবং যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণও বটে। উদীয়মান শক্তি হিসেবে চিনের যে বিস্ময়কর আর্থিক প্রগতি, তা বারংবার এই কথাই প্রমাণ করে যে, আর্থিক প্রগতির ক্ষেত্রে উদারবাদই একমাত্র বাস্তববাদী ধারণা এবং আর্থিক উন্নয়নের একমাত্র চাবিকাঠি।
বাস্তববাদ যদি কোনও বিশেষ গুণাবলী হয়ে থাকে, তাহলে তা অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা উচিত। রাজনীতি কিন্তু অর্থনীতি থেকে দূরবর্তী বিষয় নয়, অতএব দেখা যাক অর্থনীতির ক্ষেত্রে এই কথাটি কতটা প্রযোজ্য। চিনের এই যে একক পার্টি সিস্টেম, এটি এক অর্থে কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ, কারণ হংকং-সহ অন্যান্য জায়গা থেকেও প্রায় 99 শতাংশ ভোট আসে। দেন, যিনি নিজে কখনও তত্ত্বের অতিভারে নিজেকে ভারাক্রান্ত করেননি, যিনি নিজে তত্ত্বহীন তত্ত্বে বিশ্বাস করেছেন, তিনি হয়তো এই সবের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করতেন। এখন দেখা যাক, এই বিষয়টি চিনের সর্ববৃহৎ প্রতিবেশি রাষ্ট্র এবং বহুদলীয় ব্যবস্থা দ্বারা পরিচালিত ভারতবর্ষের ক্ষেত্রে কীভাবে কাজ করে। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক রাজনৈতিক খেলায় সবকটি রাজনৈতিক দলই সবথেকে বেশিসংখ্যক ইঁদুর তথা আসন দখল করতে মরিয়া। আমাদের দেশে 38% ভোট পেয়েও বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে সংসদে ক্ষমতা দখল করেছে। বিজেপি সাদা, কালো না গেরুয়া তাই দিয়ে কী যায় আসে বলুন তো? দিনের শেষে ইঁদুরটা তো ঠিকই ধরতে পেরেছে ওরা।
চূড়ান্ত বাস্তববাদ কিন্তু আদর্শের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে না। অবশ্য বিজেপির ক্ষেত্রে এটি খাটে না। বিজেপির আদর্শ হল হিন্দুত্ব, যা এই বাস্তববাদের পরিসীমা নিয়ন্ত্রণ করে। কোনও যুক্তিসঙ্গত তত্ত্ব না থাকার কারণেই আজ প্রাচীন ভারতের ‘ইতিহাস’ ওদের নির্মিত তত্ত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন, ‘ভারতবর্ষের ইতিহাস কিন্তু সেটাও, যেটা এই দেশের মানুষ প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে উপকথা, লোককথার মাধ্যমে বহন করে নিয়ে যাচ্ছেন’ (ডেকান হেরাল্ড, 17 ফেব্রুয়ারি 2021)। নৃতাত্ত্বিক এবং ঐতিহাসিকগণ মাঝে মাঝেই অলিখিত ইতিহাসের উপাদানের উৎস হিসেবে বিভিন্ন প্রচলিত আচার, সংস্কার এবং মিথের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। কিন্তু আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং তার সাঙ্গপাঙ্গদের ক্ষেত্রে এই যুক্তি খাটে না। প্রমাণবিহীন মিথই তাদের কাছে ইতিহাস। কাজেই গণেশের মাথায় হাতির মাথা হয়ে যায় আসলে প্লাস্টিক সার্জারির উদাহরণ (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী)। মহাভারতের সঞ্জয়ের কাছে নাকি ইন্টারনেট এবং উপগ্রহ ছিল, যা তাকে সাহায্য করত (ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব)। ডারউইনের বিবর্তনের তত্ত্ব ভুল, কারণ আমাদের পূর্বপুরুষরা কোথাও বলে যাননি যে, তাঁরা একটি বাঁদরকে মানুষে রূপান্তরিত হতে দেখেছেন। (উপ-মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সত্যপাল সিং)। ভারতবর্ষের পরমাণু শক্তির পরীক্ষা নতুন কিছু নয়, কারণ লক্ষ লক্ষ বছর আগে মহর্ষি কণাদ পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন (কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক)। বর্তমানে এদের ধ্যানধারণা যেমন গোরু আমাদের মা, রাম একটি নির্দিষ্ট জায়গায় জন্মেছেন এবং সেখানেই রামমন্দির হবে...এই সকল ধারণার সঙ্গে এই পূর্ববর্তী ধারণাগুলির খুব বেশি দূরত্ব নেই।
এই গুরু এবং সাধুবাবায় ঠাসা দেশে প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের এহেন নিদর্শন বর্তমান ভারতের অনেক মানুষকেই আকৃষ্ট করে। কিন্তু এরপরেও ইতিহাসের এই নিদর্শনও কিন্তু ঠিক ততটা পটু বেড়াল নয়, যতটা পটু হলে আসন জিতে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনা যায়। এর জন্য দরকার ছিল বাস্তববাদের এক ভিন্নতর নিদর্শন, যা দু’টি ডোজে মানুষের মগজে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, মুসলমানদের উন্মত্ত আক্রমণকারী হিসেবে চিহ্নিত করা এবং বলা যে, তাদের হাতেই লাঞ্ছিত হয়েছে প্রাচীন হিন্দু ইতিহাস। কিন্তু কোনওদিনই সাভারকার বা গুরু গোলওয়ালকার এইটা বলে যাননি, কেন স্রেফ মুসলমানদের এই তকমা দেওয়া হবে, ব্রিটিশদেরও কেন নয়। কংগ্রেসের মধ্যে থাকা হিন্দুত্ববাদীরা খানিকটা এই তত্ত্বে বিশ্বাস করলেও ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকদের বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছেন। আরএসএস কিন্তু কোনওদিনই ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেনি, উল্টে ব্রিটিশদের সহযোগিতা করেছে। কাজেই ক্ষমতার দাবিদার হিসেবে নিজেদের গণ্য করতে এত সময় লেগেছে বিজেপির। যদিও এই প্রথম বাধা অতিক্রম করার পর দ্বিতীয় দফায় দেওয়া হল আরেকটি ডোজ। হিন্দুরাষ্ট্র তৈরি করতে গেলে মুসলমানসহ অন্যান্য ধর্ম থেকে হিন্দু ধর্মকে রক্ষা করতে হবে। বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করল। কিন্তু এই চ্যালেঞ্জ জিততে গেলে যেটা দরকার, সেটা হল সরকার এবং দেশের মধ্যে কোনও সূক্ষ্ম ফারাক রাখা যাবে না। কারণ ভারতীয় সংবিধানের মূল কারিগর কিন্তু হিন্দুত্বের প্রতি অনুগত ছিলেন না এবং এই হিন্দু ধর্মের জাতিভেদ প্রথার জন্য বিরক্ত হয়েই তিনি তাঁর ধর্ম পরিবর্তন করেছিলেন।
তবে এইটা কিন্তু ঠিক যে, পারদর্শী বিড়াল, ইঁদুর ধরতে গেলে বাস্তবতার সঠিক পাঠ থাকা প্রয়োজন। যে মুহূর্তে সরকার অর্থেই দেশ এবং রাষ্ট্র এই সরল সমীকরণটি আপনার মাথায় পরিষ্কার করে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে, সেই মুহূর্ত থেকেই বাকি কাজটা ভীষণ সহজ হয়ে যাবে। সরকার দেশের বহিরাগত এবং অভ্যন্তরীণ, উভয় শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করছে, বিশেষত তাদের বিরুদ্ধে, যারা আমাদের অতীত ঐতিহ্যকে ধ্বংস করেছে অথবা সরকারের বিরোধিতা করে দেশদ্রোহিতা করেছে। স্বাভাবিক ভাবেই এদের বিরুদ্ধে নির্মম আচরণ করা হবে, কারণ তারা দেশ তথা সরকারের বিরোধিতা করেছে। এই মুহূর্তে দেশরক্ষা করতে গেলে যে কোনও ধরণের বিরোধী স্বরের কন্ঠরোধ করতে হবে, আপাতদৃষ্টিতে অন্যায় মনে হলেও এছাড়া আর পথ নেই। কোনও সরকারি নীতির বিরুদ্ধে বৈধ প্রতিবাদ আর বৈধ থাকবে না। এই বৃহৎ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতামূলক আইনে মামলা করা হবে। নিজের ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য রাষ্ট্রের ক্ষমতাকে ব্যবহার করা, এটি একটি সুস্থির, দৃঢ়চেতা, অনমনীয় নেতার মস্তিষ্কপ্রসূত।
এই দেশদ্রোহিতা আইনটা কী অসাধারণ জিনিস, তাই না? এই আইনটা সরাসরি দু’টো ভাগে মানুষকে ভাগ করে দেয়। একদিকে যারা নেতাকে সমর্থন করে, আসল দেশভক্ত আর অন্যদিকে ক্রূর দেশদ্রোহীর দল, যারা দেশকে ভাঙতে তৎপর, ওই ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’-এর মতো। এর মধ্যেও এক শ্রেণির মানুষ আছেন, যারা চুপ করে থাকেন (হয়তো তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ)। তারা চুপ করে থাকেন, কারণ নেতা না হলেও এই দেশদ্রোহী আইন তাদের জীবন ছারখার করে দেবে। এই চুপ করে থাকা জনগণ কোনও খারাপ দেখবে না, অন্ধ সেজে থাকবে, কোনও খারাপ কিছু শুনবে না, বধির সেজে থাকবে, কোনও খারাপ কিছু বলবে না এই সরকারের বিরুদ্ধে। এর থেকে বাস্তববাদী আর কোনও বিড়াল আছে ইঁদুর ধরার জন্য? মানুষকে কিন্তু এই বিড়ালের রং চিনিয়ে দেওয়া হবে। এই বিড়াল সাদা, কালো বা লাল নয়, এই বিড়াল গেরুয়া। দেন-এর উচিত ছিল নিজের তত্ত্বকে বিশ্বজনীন করে তুলতে আরও বেশ কিছু রং-এর বিড়ালের কথা ভেবে রাখা।
কিন্তু এই অসাধারণ পরিকল্পনা কেন বাস্তবের মাটিতে কাজ করছে না? অনেকগুলি ত্রুটি এই মুহূর্তে চোখে পড়ছে। এটি কি ভূমিকম্পের পূর্বাভাস? ধরা যাক হিন্দুরাষ্ট্রের কথা। দলিতরা এর ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন যে, এই জাতিভেদ প্রথা দলিতবিরোধী। আম্বেদকরের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তারা দাবি করেন উচ্চশ্রেণীর পেশোয়াদের বিরুদ্ধে ভীমা কোরেগাঁওয়ের যে ঐতিহাসিক লড়াই, দলিতদের যে ঐতিহাসিক লড়াইকে স্বীকৃতি দিতে হবে। তাদের থামানো দরকার ছিল এবং দুইজন স্থানীয় উচ্চশ্রেণির দেশভক্ত এই কাজ করতে দাঙ্গা লাগাচ্ছিলেন। এই জাতিভেদ প্রথা জর্জরিত হিন্দুধর্মের এই চ্যুতিরেখা প্রকাশ করে দিয়েছে। দেশদ্রোহিতা আইন দিয়ে সুরক্ষিত বাস্তববাদ আরও উন্নত সমাধান খুঁজছিল।
জাতপাত থেকে দেশদ্রোহিতা হয়ে একেবারে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্র...না, ন্যারেটিভ পাল্টাতে পুলিশ কিন্তু বেশি সময় নেয়নি। একদল কবি, আইনজীবী, লেখক মানবাধিকার কর্মীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার অপরাধে সময় ব্যয় না করেই শুরু হয় রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা। এঁরা সকলেই দেশদ্রোহী এবং স্বাভাবিক ভাবেই এঁরা অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। অতএব শাসকের রোষানলে এরা পুড়বেন, এটাই স্বাভাবিক। এঁদের কম্পিউটারে নাকি প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিড়াল এতক্ষণে ইঁদুরটা ধরে ফেলেছে। কিন্তু ভাগ্যের কী পরিহাস দেখুন! বস্টনে বসে থাকা এক আরও বড় কুশলী পরীক্ষা করে জানালেন যে, এঁদের কম্পিউটারে এই প্রমাণ জোর করে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এইসব খবর চাপা থাকে না, কারণ ওয়াশিংটন পোস্টের মতো খবরের কাগজ এখনও আছে, যারা নিক্সনের মতো দুঁদে রাষ্ট্রপতিকেও ওয়াটারগেট দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে আক্রমণ করে তাঁকে পদচ্যুত করে। আমাদের দেশের মতো বিক্রি হয়ে যাওয়া মিডিয়া, যারা কোনও কিছু খারাপ দেখে না, তাই খারাপ বলে না এবং জনগণও তাই খারাপ কিছু শোনে না, তাদের থেকে ওয়াশিংটন পোস্ট অনেকটাই আলাদা। এই ওয়াশিংটন পোস্টই প্রথম বস্টননিবাসী সেই বিশেষজ্ঞের কথা প্রকাশ করে। যে আইনজীবী এই দেশদ্রোহিতার মামলায় অভিযুক্তদের হয়ে সওয়াল করছিলেন, তিনি এই মামলার সমস্ত তথ্যপ্রমাণ বস্টনে পাঠান এবং বলেন, যা চলছে তা আসলে হিমশৈলের চূড়া মাত্র। এরপরেই আরও কিছু দুষ্ট দেশদ্রোহী এই একইরকম ম্যালওয়ার রেখে দেওয়া এবং ইভিএম (বৈদ্যুতিন ভোটিং মেশিন- পেপার ট্রেইল শনাক্তকরণ সহ)-এ কারচুপির সম্ভাবনা দেখেন।
অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত ছিল এই বিষয়টি নিয়ে নিরন্তর প্রচার আন্দোলন চালানো। কিন্তু তারা সেটা করেননি। দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল ‘মা এবং তার দুই ছানা’ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পক্ষাঘাতে ভুগছে এবং অপরটিও ‘আমরা দু’জন এবং আমাদের দু’জন’ নামক পরিবারতন্ত্রে ভুগছে। এর ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে, চুপ করে থাকা ভয়ার্ত জনতার সামনেই বিড়াল একের পর এক দুষ্ট ইঁদুর ধরে নিচ্ছে। বহুদিন ধরে অন্যায়ের বিরুদ্ধে মূক-বধির-অন্ধ সেজে থাকা এই মধ্যপন্থী জনতা আজ হঠাৎ করেই জেগে উঠছে। এরা আমাদের দেশের কৃষক, যারা এই জঘন্য খেলার মধ্যে থেকেই সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। এইবার ফাঁদে পড়েছে বিড়াল। লক্ষ লক্ষ ইঁদুর ঘিরে ধরেছে তাকে। বিড়াল যদি বাস্তববাদী হয়ে থাকে, তাহলে এতক্ষণে তার বুঝে যাওয়ার কথা যে, এই খেলা আর খুব বেশি দিন চলবে না।
(অর্থনীতিবিদ অমিত ভাদুড়ী জওহরলাল নেহরু বিশবিদ্যালয়ের (JNU) প্রাক্তন এমেরিটাস প্রফেসর, শিক্ষা- কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ, আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলোজি (MIT) এবং ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে; অধ্যাপনা পৃথিবীর নানা শিক্ষাক্ষেত্রে। গরিব মানুষকেও উন্নয়নের জোয়ারে সামিল করার ব্রতে তাঁর কাজ)