এই অভিজ্ঞতা কিন্তু বাংলার ছেলেমেয়েদের একেবারেই এক্সক্লুসিভ! যেমন শিক্ষার ক্ষেত্রে রামমোহন, বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ একেবারই বাংলার নিজস্ব সম্পদ। এই যে বর্ষাকালে গরমের ছুটি, তার কথা বলছি আমরা। রামমোহন, বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথের পথ অবশ্য সারা দেশ অনুসরণ করেছে (অন্তত কাগজে কলমে)। এই অনন্য ছুটির ক্ষেত্রে বাংলার দৃষ্টান্ত অবশ্য কেউ অনুসরণ করছে বলে জানা নেই।
পশ্চিমবঙ্গে স্কুলের গরমের ছুটি যে দিনগুলোর জন্য বাড়ানো হয়েছে, সেই দিনগুলোতে আবহাওয়া কেমন থাকবে? বৃহস্পতিবার 16 জুন থেকে শুরু করে 22 জুন পর্যন্ত সাত দিনে কলকাতায় বৃষ্টির সম্ভাবনা শতাংশের হিসাবে এই রকম – 60, 70, 70, 70, 60, 70 এবং 50 শতাংশ। এই সময়ে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে যথাক্রমে 32 থেকে 27 ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে, যা কিনা স্বাভাবিক, কোনওভাবেই একে তাপপ্রবাহ (স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি তাপমাত্রা) বলা যায় না।
কলকাতাই অবশ্য তো সারা বাংলা নয়। রাজ্যের পশ্চিম প্রান্তে রুখুশুখু পুরুলিয়ার আবহাওয়ার পূর্বাভাস কী? ওই একই সাত দিনে পুরুলিয়ায় বৃষ্টির সম্ভাবনা শতাংশের হিসাবে – 70, 70, 70, 80, 60, 50 এবং 60 শতাংশ। এই সময়ে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে যথাক্রমে 33 থেকে 25 ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। উত্তরবঙ্গে বর্ষা এসেই গিয়েছে। বহরমপুর, সিউড়ি, মেদিনীপুর সর্বত্রই আবহাওয়ার পূর্বাভাস মোটামুটি একই রকম, গরমকালের স্বাভাবিক তাপমাত্রা, বৃষ্টির সম্ভাবনা 50 থেকে 80 শতাংশ।
অর্থাৎ, গরমের জন্য স্কুল বা অন্য কিছু বন্ধ থাকার কোনও বাস্তবিক কারণ নেই।
তবু কেন এই রাজ্যে স্কুল বন্ধ?
একটা সম্ভাব্য উত্তর হতে পারে রামমোহন, বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথের উত্তরসূরী তো বাংলা, তাই বর্ষা কালে গরমের ছুটি দিয়ে আমরা একটা নতুন কিছু করে দেখাতে চাইছি! এই রকম নতুন কাজের জন্য তো জীবনভর সাধনা লাগে না, একটা ব্রেনওয়েভ আর একটা তুড়ি মেরে টুইটেই হয়ে যায়! সস্তায় মন্দ কী!