4thPillar


অর্ধেক আকাশ

রঞ্জন রায় | 08-03-2020May 20, 2023
অর্ধেক আকাশ

(আন্তর্জাতিক নারীদিবসে কিছু এলোমেলো ভাবনা)

সকালবেলায় কবিতা পড়ছিলাম। আজকালকার কবিতা আমি বুঝি না। আমার প্রয়াত বন্ধু, লেখক রাঘব বন্দ্যোপাধ্যায় বলতেন, প্রত্যেক মানুষ তার নিজের সময়ে বাঁচে।

খাঁটি কথা। আমিও তাই পড়ছিলাম মণীশ ঘটকের কবিতা। জোরে জোরে, দুলে দুলে। আসলে আমাদের সময়ে ওইভাবেই পড়া মুখস্থ করতে হত কি না।

“দেবী তো নহ, বল তো তোমায় কেমনে পূজা করি?

তোমার মুখে দিব্য বিভা বৃথাই খুঁজে মরি।

আছে তোমার ললিত বাহু, নিটোল দুই স্তন,

তপ্ত তনু।“

ব্যস, খনখনিয়ে বেজে উঠল গিন্নির গলা।

— সক্কালবেলা, এসব কী শুরু হয়েছে?

 —মানে, কবিতা।

—তো তোমাদের চোখে মেয়েদের বর্ণনা শরীর থেকেই শুরু? তাও সোজা বুক থেকে? তারপর নাভি বা তার নীচে।

 —এসব কী বলছ খুকুর মা?

 —কেন, সেদিন আর একটা কবিতা পড়ছিলে না? “নাভিমূলে ফিরে যাব“ বা ওইরকম কিছু? আমার কথা হল, ঋগবেদে পুরুষসূক্তে আদিত্যবর্ণ পুরুষের বর্ণনা শুরু হয়েছে মস্তক থেকে, তাহলে মেয়েদের শরীরের বর্ণনা কেন বুক থেকে? আমাদের কি মাথা নেই? না তাতে ব্রেন ম্যাটার তোমাদের থেকে কিছু কম?

—তা, ভাববার কথা বটে!

—তুমি ভাববে? তাহলেই হয়েছে। কালিদাস নিজে সরস্বতীর রূপবর্ণনায় সেই একই পূর্বাগ্রহ দেখিয়েছেন: জয় জয় দেবি চরাচরসারে, কুচযুগ শোভিত মুক্তাহারে!

—দেখছ তো, সবকটা কবি; সে কালিদাস থেকে মণীশ ঘটক— সবাই মেয়েদের বুক নিয়ে মজে আছে। মেয়েরা সব সময়েই অবজেক্ট— বুদ্ধি নেই, মেধা নেই, ব্যক্তিত্ব নেই।

—কেন রবীন্দ্রনাথ? ’মুখপানে চেয়ে দেখি’ লেখেননি? বা ‘ঝড়ে যায় উড়ে যায় গো, আমার মুখের কাপড়খানি’।

—আমার মুখ খুলিও না। উনি আগে লিখেছিলেন— আমার বুকের কাপড়খানি। শেষে শান্তিনিকেতনী বেহ্মদের পরামর্শে ‘বুকের’ জায়গায় ‘মুখের’ হল। স্বয়ং মুজতবা আলী সাক্ষী। আরও আছে ‘নিরাবরণ বক্ষে তব নিরাভরণ দেহে, চিকণসোনা লিখন উষা আঁকিয়া দিল স্নেহে’। কাজেই জোর গলায় বললেই মিথ্যেটা সত্যি হয়ে যায় না। তোমাদের জাতটাই এমনি। মানসচক্ষে মেয়েদের নিরাবরণ আর নিরাভরণ করে দেখতেই ভালবাস।

—উঃ, অনেক হল; এবার আমার কথাটা একটু শোন।

—শুনব, আগে চায়ের জল চড়িয়ে এস। ঘরের কাজেকম্মে একটু হাত লাগাও।

 —গ্যাসে জল চড়িয়ে এসে শুরু করি।

—দেখ, আজ থেকে দেড়শ বছর আগে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন ‘নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার কেন নাহি দিবে অধিকার, হে বিধাতা?’ বন্দনা করেছেন উর্বশীর, মানে নারীর সেই স্বতন্ত্র রূপের—নহ মাতা, নহ কন্যা, নহ বধূ সুন্দরী রূপসী। সৃষ্ট হয়েছে ‘শেষের কবিতা’র লাবণ্য ও ‘ল্যাবরেটরি’র নীলার মত চরিত্র।

—হুঃ; মন দিয়ে দেখ লাবণ্য হোক কি কেটি মিটার, অথবা সোহিনী কি ওর মেয়ে নীলা—কারও কোন স্বতন্ত্র নারীসত্তা নেই। ওরাও পুরুষের কল্পনায়, মানে তোমরা যেমন করে মেয়েদের দেখতে ভালবাস—সেই ছাঁচে তৈরি।

—আর মণীশ ঘটক? গোটা কবিতাটা শুনলে বুঝতে উনি আদিকাল থেকে মেয়েদের দেবী বানিয়ে যে ফাঁকিবাজি, সেটাকেই ঝাড় দিয়েছেন। একটা কবিতা দেখেই কি কবির গোটা দৃষ্টিভঙ্গি বোঝা যায়?

—মানছি, মনু থেকেই ব্যাপারটা চলে আসছে। একবার বলা হচ্ছে যে ঘরে নারীর সম্মান পায়, সেই ঘরে দেবতার নিবাস। উনিই আবার বলছেন নারী স্বতন্ত্র নয়। শৈশবে পিতার, যৌবনে স্বামীর ও বার্ধক্যে পুত্রের রক্ষণাবেক্ষণে থাকতে হয়। তুলসীদাস সেই লাইনেই রামচরিতমানসে খেলে দিয়েছেন,

 “চোর, ঢোর , গাঁওয়ার, শূদ্র ও নারী,

ইয়ে সব হ্যায় তারণ অধিকারী।

এদের বশে রাখতে চাই লাঠির বাড়ি।।''

আমি এবার নিজের লাইন পেয়ে গেছি। আলোচনার মোড় ঘুরিয়ে দিই।

— খেয়াল করেছ যে প্রাচীন সমস্ত ধর্মশাস্ত্রে নারীর ভূমিকা গৌণ। বেদে উষা ও সরস্বতী ছাড়া কোন দেবী নেই। যত প্রধান বৈদিক দেবতা, অগ্নি, মিত্রাবরুণ, ইন্দ্র, সবাই পুরুষ।

— ইতিমধ্যে মেয়ে হাজির, তিনকাপ চা নিয়ে।

— কেন যে বাপিকে বল চা করতে? জল ফুটে শুকিয়ে গেছল। আমি ফের বানিয়ে আনলাম।

— কোন কাজ যদি ঠিকমত করে!

— আসলে ওর মাথায় সারাক্ষণ একটা ভাবের ঘুঘু ডাকতে থাকে। এই আর কি! সবাই কি আর একরকম হয় বৌমা? ও ছোটোবেলা থেকেই একটু অন্যরকম।

—এইসব আশকারা দিয়েই তো ওকে এ রকম বানিয়েছেন মা; স্পেয়ার দ্য রড এন্ড স্পয়েল দি চাইল্ড!

—আরে ঠাম্মা এসে গেছে! একটু বাবাকে সাপোর্ট দাও তো! আমি তোমার জন্যে চা নিয়ে আসছি।

—তোমাদের কথা শুনছিলাম, বৌমা। শাস্ত্র নিয়ে একটু একপেশে লাগছে। বৈদিক যুগে যাই হোক, শাক্ত ও বৈষ্ণব মতে নারীকে কি সবচেয়ে সম্মান দেওয়া হয়নি? স্বামীর বুকে পা দিয়ে ওই দাঁড়িয়ে আছে মা কালী। এমন এমপাওয়ারমেন্ট! আর দুর্গা ? অসুরনিধনের জন্য সব দেবতারা হার মেনে ওঁর শরণাপন্ন হলেন। এদিকে রাধারাণীর কৃপা না হলে কৃষ্ণলাভ হয় না। সব ভক্তরা রাধাভাবে ভাবিত হয়ে সাধনা করেন। চৈতন্যচরিতামৃত বা চৈতন্যভাগবত পড়ে দেখ। কৃষ্ণ নিজে রাধার মান ভাঙাতে বলছেন যে, আমার মাথায় তোমার পা তুলে দাও, ‘দেহি পদপল্লবমুদারম।‘ গোস্বামী জয়দেব লিখে গেছেন।


অর্ধেক আকাশ

—মা, একটা কথা বলি। এসব হচ্ছে পুরুষদের চালাকি। মেয়েদের দেবী বলে পূজো করা হয় কিছু অ্যাবস্ট্রাক্ট বায়বীয় ইস্যুতে। কিন্তু দৈনন্দিন বাস্তবে প্রতিনিয়ত ওদের মনে করিয়ে দেওয়া হয় যে ওরা সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেন। বাবা-মার আর্থিক সামর্থ্য কম হলে, মানে ছেলে মেয়ে দু’জনকে হায়ার স্টাডিজ দিতে না পারলে, ছেলেকে করাবে প্রফেশনাল কোর্স, মেয়েকে বলবে ঘর সামলাতে শেখ, আর বি এ/বিএসসি পড়। কারণ, মেয়ে হল পরের বাড়ির আমানত। বিয়ে দিয়ে বিদেয় করতে হবে; মানে লায়াবিলিটি। আর ছেলেকে পড়ানো মানে ইনভেস্টমেন্ট। ছেলে স্বর্গে বাতি দেবে।

—হ্যাঁ ঠাম্মা; আসলে এটা একটা ম্যানেজমেন্ট স্ট্র্যাটেজি, একটা গেম। আমাদের অফিসেও চলে। একজনকে ডোবাতে হলে আগে বার খাইয়ে গ্যাস দিয়ে মাথায় তোল, তারপর তাকে ক্ষুদিরাম করে দাও।

আমি সায় দিই, পুত্র শব্দের সমাস ভাঙলে দাঁড়ায় যে, ‘পুং নামক নরক হইতে ত্রাণ করিবে’! এতে গিন্নির পুরুষবিদ্বেষে ঘি পড়ল।

—আর বিয়ের পর? বৌ সবার শেষে খাবে, স্বামী দেরি করে ফিরলে ( সে কাজে আটকে ছিল, নাকি বন্ধুদের সঙ্গে চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিল—কে দেখছে?) নিজে না খেয়ে খাবার আগলে বসে থাকবে।

মায়ের মুখ ভার হল।

—বৌমা আমি তোমাকে কখনও কিছু বলিচি?

—না। আপনার তো একই ছেলে, মেয়ে নেই। যদি হত, তাহলে কী করতেন বলা মুশকিল। আমি মেডিকেল পড়তে চাইতাম; বায়োলজিতে ভালই করছিলাম। কিন্তু বাবা ভাইকে পড়াল। আমাকে উচ্চ মাধ্যমিকে আর্টস নিতে চাপ দিল। বলল আমার বিয়েতে খরচা আছে, তাই।

—তোমাকে খাওয়াদাওয়া নিয়ে কিছু বলিচি? ছেলে আর বৌমার মধ্যে মাছের পিস নিয়ে ?

—তা বলেন নি। আপনি অন্যদের মত না। কিন্তু ভাবুন, নতুন বিয়ে হয়ে এসেছি। সাতদিনের মাথায় আমাকে বললেন যে বৌমা তোমার সবার আগে ওঠা উচিত। নতুন বৌ দেরি করে ওঠে, এটা ভাল দেখায় না।

—হ্যাঁ, বলিচি। তোমার শ্বশুরমশায় বলেছিলেন এটা বলতে। তোমার কী হয়েছে, বলত? আজ তুমি এইসব কথা তুলছ?

—আচ্ছা,আপনি বা বাবা কখনও নিজের ছেলেকে সকালে বিছানা ছাড়তে বলেছেন? জানতেন, যে তখন আপনার ছেলেই আমাকে উঠতে দিত না?

 আমার শাশুড়ি ঘর ছেড়ে চলে গেলেন।

মেয়ে বলল— মা, পুরনো কাসুন্দি ঘেঁটে লাভ নেই। আজকাল এসব হয় না। ছেলেমেয়ে দুজনেই চাকরি   করে। আমার বিয়ে হলে এসব ইস্যু নিয়ে আগেই মামলা ক্লিয়ার করে নেব। নো ঝামেলি!

—তোর বাবা কেন চুপ করেছিল? কখনও আমার পাশে দাঁড়িয়েছে? বরং বলেছে মা-বাবা অন্য জেনারেশন; ওঁদের চিন্তা এত তাড়াতাড়ি পালটানো সম্ভব নয়। বরং তুমিই একটু মানিয়ে নাও।

—সে কি বাপি, তুমি এইসব বলেছিলে?

—শুধু তাই? কোন পারিবারিক ঝামেলা দেখলে বলেছে, আমি এতে মাথা গলাব না। তুমি একজন প্রাপ্তবয়স্ক লেখাপড়া জানা মহিলা। যা উচিত মনে হয় করবে। আমি কোন দিকে নেই।

—বাপি, এত এড়িয়ে যাওয়া! তুমি অফিসে ইউনিয়ন কর, বেশ অ্যাকটিভ, মায়ের ব্যাপারে এমন কেন? না, উকিলের যুক্তি শুনব না। অনেস্ট আন্সার চাই।

আমি চুপ করে গেলাম। কী যে বলি! মাথাটা একটু ধরেছে।

—বাপি, আমরা অপেক্ষা করছি।

মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে চমকে গেলাম। চোয়াল শক্ত, চোখ জ্বলছে। এ কি আমার সেই খুকু? কবে এত বড় হয়ে গেল? ঢোঁক গিললাম। আস্তে আস্তে চোখ তুলে সামনের দেয়ালের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলাম।

—কী জানিস, আমার সংকোচ হত। খোলাখুলি বৌয়ের সমর্থনে দাঁড়ালে লোকে যদি আমাকে স্ত্রৈণ ভাবে?

—উঃ, কী কঠিন সব বাংলা শব্দ, ইংরেজিতে  কী বলে?  হেন-পেকড-হাসব্যান্ড? ঠিক বুঝেছি? আচ্ছা, তোমরা তো বাঙাল; ঠাকুমা দাদুরা কী বলত?

আমি চুপ।

—আচ্ছা, আমি হেল্প করছি। ঘটিরা বলে বৌয়ের হাতধরা। বাঙালরা?

—মাইগ্যা!

 

—তো লাইফ-পার্টনারের অসম্মান হলে, তার পক্ষে দাঁড়ালে সে ‘মাইগ্যা’? তোমার গায়ে এই লেবেল সেঁটে যাবে এই ভয়ে তুমি চুপ। আমি হলে এমন হাজব্যান্ডকে ডিভোর্স দিতাম।

—এই চুপ কর! সক্কালবেলায় ওসব অলুক্ষুণে কথা বলিস না।

—এই ভয়েই তো তোমরা গেলে মা। এটাই তোমাদের ব্ল্যাকমেইলিং পয়েন্ট।

—আচ্ছা বাপি, তোমার কাপড় তো তুমি নিজে ধোও; কিন্তু তোমার শরীর খারাপ হলে কে ধুয়ে দিত?

—তোর মা।

 ঠিক। কিন্তু মার শরীর খারাপ হলে?

আমি নিরুত্তর। মেয়ে পাবলিক প্রসিকিউটরের মত আঙুল উঁচিয়ে জিজ্ঞেস করে, মার শরীর খারাপ হলে?

 —বাস্কেটে পড়ে থাকত।

—কেন? অসুস্থ বৌয়ের কাপড় ধুলেও সেই ‘মাইগ্যা’?

—এখন তো ওয়াশিং মেশিনে ধোয়া হয়।

—সে হয়। ওয়াশিং মেশিন, কুকিং গ্যাস ও প্রেসার কুকার ঘরের কাজ অনেক সহজ করে দিয়েছে। ছেলেরাও পারে, কিন্তু করে না।

—শোন বাপি। ক’বছর আগে সুপ্রীম কোর্টের জাস্টিস সীকরী রিটায়ার করে ফেয়ারওয়েল অ্যাড্রেসে বলেছিলেন যে, ভাল জাস্টিসের মধ্যে কিছু নারীত্ব থাকা উচিত। তাহলে বিচার ভাল হয়। উনি বলছেন যে, কমপ্যাসন একটা দামি সেন্টিমেন্ট বা মাইন্ডসেট। উনি বলেছেন যে, উনি হ্যাপি ওঁর মধ্যে কিছু নারীসুলভ গুণ আছে।

 আমি সঙ্গে সঙ্গে ফুট কাটি —  হ্যাঁ, রবীন্দ্রনাথও এমনি কিছু বলেছিলেন, “দণ্ডিতের সাথে দণ্ডদাতা কাঁদে যবে সমান আঘাতে, সর্বশ্রেষ্ঠ সে বিচার।“

—ভুল বুঝেছ, উনি কিন্তু নারীসুলভ গুণের জন্যে লজ্জা পান নি।

আমি প্রাণপণে গোলপোস্ট সরাতে চাই।

—কী জানিস?  আসলে আমরা, মানে পুরুষেরা, হাজার হাজার বছর ধরে প্রিভিলেজড। যুক্তি দিয়ে বুঝলেও অভ্যেস যায় না। ইংরেজদের মধ্যে অনেক ভাল লোক ছিল, বুঝত কলোনিয়ালিজম কত বড় ইভিল। কিন্তু....

—হ্যাঁ। ঘাড়ধাক্কা না খেলে কেউ....। গিন্নি আমার কথা কেটে দেয়।

—আসছে তোমাদের ঘা খাওয়ার দিন। আমাদের দিন গেছে। এরা, এই এদের জেনারেশন তোমাদের শিক্ষে দেবে।

—তা ঠিক। উইমেন্স লিব আন্দোলন এখনও এদেশে তেমন করে...

 —না বাপি। সবই পাল্টাচ্ছে। আমরা বুঝি, উইমেন্স লিবের কোর ইস্যু হচ্ছে ছেলেদের সচেতন করা যে ওরা কত বর্বর। অর্থাৎ এই আন্দোলন পুরুষদের বাদ দিয়ে নয়, বরং ওদের সাথে নিয়ে এক ইনক্লুসিভ মুভমেন্ট। হাজার বছর ধরে সুবিধা পেয়ে ওরা ধরে নিয়েছে এটাই স্বাভাবিক ব্যবহার। এখনও ওদের মধ্যে ভদ্র এলিমেন্টরা বড় জোর মেয়েদের দেখে ডিসট্রেসড ড্যামজেল হিসেবে। নিজেদের মনে করে শিভালরাস নাইট। বোঝে না এতে আমাদের অপমান করা হয়। স্ক্যান্ডেনেভিয়ান কান্ট্রিজে বাসে ট্রেনে লেডিস সীট নেই। সিনিয়র সিটিজেন ও শিশুদের জন্য আছে। অর্থাৎ মেয়েরা দয়া চায় না, প্রোটেকশন চায় না, সমান স্পেস চায়। নিজের শরীর ও মনের উপর স্বাধিকার চায়।

 —ওরে বাবা! কী লেকচার দিলি রে! আন্তর্জাতিক নারী দিবস কবে? কলেজে বলবি নাকি?  গলা শুকিয়ে গেছে। একটু কফি খাওয়াবি?

—কালকেই ৮ মার্চ। কিন্তু এখন তুমি গিয়ে কফি বানিয়ে আনো। আগের বার ছড়িয়েছিলে। আর নারীদিবস বছরে একদিন কেন? কেন রোজ হবে না? অর্থাৎ এটা আলাদা করে পালন করার দরকার কী? কই, ঘটা করে পুরুষদিবস তো হয় না!

মেয়ে ঠিক বলছে। আজ থেকেই শুরু করি। পাঁজি দেখে কাল কেন? জব জাগ উঠা, তভী সবেরা।

 যখন ঘুম ভেঙেছে, তখনই সকাল।


New
মাদক ব্যবসা ও বিভাজনের রাজনীতির আবর্তে আজকের মণিপুর
ভ্রাতৃঘাতী লড়াইয়ে রাষ্ট্রীয় মদত? বিস্ফোরক রিপোর্ট অসম রাইফেলসের
বিরোধী জোট আছে, রাজনীতি কই?


Other Writings by -রঞ্জন রায় | 08-03-2020

// Event for pushed the video